9 ב ·תרגם

দেলু আর তার যান্ত্রিক পাখি

দেলু ছিল গ্রামের সবচেয়ে উদ্ভট স্বভাবের ছেলে। ওর মাথায় যেই না কোনো নতুন চিন্তা ঢোকে, অমনি সে সেটা বানাতে বসে যায়। একবার হাঁসের মত হাঁটতে হাঁটতে সে বলল, “যদি আমি একটা পাখির মতো যন্ত্র বানাতে পারি, যে উড়বে আর কথা বলবে—তাহলে গ্রামের সবাই তাক লাগিয়ে যাবে!”

তিন মাস ঘরে বসে, ভাঙা রেডিও, পুরোনো পাখার ব্লেড আর সাইকেলের চেন দিয়ে সে বানিয়ে ফেলল এক বিচিত্র ‘যান্ত্রিক পাখি’। পাখির গায়ে রঙ করলো—একপাশে লেখা “আকাশরাজা”, আর অন্য পাশে “দেলু ইনভেনশন”।

গ্রামের মাঠে সবাইকে ডেকে আনলো। বলল, “আজ আকাশরাজা প্রথম উড়বে! দেখো, আমিই দেশের পরবর্তী বিজ্ঞানী!”
লোকে ভিড় করে দাঁড়ালো, কেউ হাসলো, কেউ কৌতূহল নিয়ে তাকালো।
দেলু বড় ভঙ্গিতে পাখির সুইচ অন করলো। মোটরের ঘর্ঘর শব্দ হতেই পাখিটার ডানা কাঁপতে শুরু করলো।

হঠাৎ এক বিকট শব্দ—ধুম! পাখি মাটি থেকে এক ইঞ্চিও উঠলো না, বরং তার ডানাটা খুলে গিয়ে পাশের হারুন কাকার লুঙ্গিতে জড়িয়ে গেল! হারুন কাকা হাউমাউ করে চিৎকার, “এই কী হইলো রে!”
পাখির মাথা ঘুরে গিয়ে কারো পায়ের ওপর পড়লো, আর বাকি অংশ ছিটকে গিয়ে মাঠে গরুর পাশে গিয়ে পড়লো। গরু ভয় পেয়ে দৌড় দিল, সঙ্গে দেলুও!

লাজে-লজ্জায় দেলু সেই দিন পুরোটা মাঠে লুকিয়ে রইলো। লোকজন এখনো বলে, “দেলু না পাখি বানাতে গিয়ে লুঙ্গি উড়িয়ে দিয়েছিল!”

তবে দেলু দমে যায়নি। পরে সে বলেছিল, “ভুলে যদি এমন হয়, ঠিকভাবে করলে তো আকাশই আমার!”

#sifat10