9 ב ·תרגם

রহিমের রেডিও বিপদ

রহিম ছিল গ্রামের একমাত্র রেডিও-প্রেমিক। তার ঠাকুরদার রেখে যাওয়া পুরনো রেডিওটা ছিল তার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস। সকালবেলা ‘আকাশবাণী’, দুপুরে ‘বেতার নাটক’, আর রাতে খবর শুনে সে ভাবতো, “এই তো শহরের লোকদের মতো চলছি!”

একদিন রেডিওতে খবর এলো—“বৃষ্টি হতে পারে, প্রস্তুত থাকুন।”
রহিম বলল, “আমার রেডিও যা বলে, সেটাই সত্য!”
সে হাঁক দিল, “সবাই ঘরে ঢুকো! আকাশে কালো মেঘ নেই, কিন্তু রেডিও বলছে বৃষ্টি আসছে!”

লোকজন হাসল, “রহিম ভাই, আকাশে এক টুকরো মেঘ নেই!”
কিন্তু রহিম গোঁ ধরে বলল, “দ্যাখো না, হঠাৎ এক ঘন্টায় প্লাবন হবে!”

সে নিজের উঠানে ত্রিপল টাঙিয়ে বসল, ছাগল-মুরগি ঢুকিয়ে রাখলো ভিতরে, নিজেও রেইনকোট পরে অপেক্ষা করতে লাগল।
ঘণ্টা গেল এক, দুটো, তিনটে… রোদে তার মাথা তেতে উঠলো। বৃষ্টির ছিটেফোঁটা নেই।

একটা ছোট ছেলে পাশ দিয়ে যেতে যেতে বলল, “রহিম কাকা, এইটা কি গরম বৃষ্টি?”
রহিম গম্ভীর মুখে বলল, “তোমরা বুঝবে না, এইটা হলো ‘অদৃশ্য বৃষ্টি’!”

পরদিন আবার রেডিও বলল, “আজ ঝড় হতে পারে।”
রহিম আবার প্রস্তুত! বাড়ির চালের টিন বেঁধে, কলসি উল্টে, গলায় দড়ি বেঁধে বলল, “ঝড় যদি উড়ে নিয়ে যায়, তবে যেন পাইপে আটকে পড়ি!”

লোকজন এবার হেসে গড়িয়ে পড়লো। কেউ বলল, “রহিম ভাই, আপনার রেডিও বোধহয় পুরনো হয়ে গেছে!”
রহিম মাথা নেড়ে বলল, “না রে ভাই, আমি তোকে বলছি—রেডিও কখনো ভুল করে না, শুধু সময়টা একটু আগাতে-পিছাতে পারে!”

সেই থেকে রহিমের নাম হয়ে গেল ‘রেডিও রহিম’। এখনো কেউ বৃষ্টি আসার আগেই জিজ্ঞেস করে, “রেডিও রহিম ভাই, আজ কি আবার ত্রিপল টাঙাতে হবে?”

#sifat10