দাদি ছিলেন প্রচন্ড আত্মমর্যাদা সম্পন্ন বাস্তবাদী একজন নারী তাইতো দাদা যখন পরক্রিয়ায় লিপ্ত হয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন তা সে চুপচাপ মেনে না নিয়ে চরম প্রতিবাদ করেছিলেন ৷ঐ সময়টাতে যেখানে মেয়েরা বাধ্য হয়ে চার সতীনের ঘর পর্যন্ত করতো নিজের সংসার হারানোর ভয়ে সেখানে আমার দাদি দাদার বিরুদ্ধে আইনের লড়াই পর্যন্ত লড়েছিলেন ৷চারপাশ থেকে মানুষের কথার ভীরে থেমে থাকেননি তিনি ,অবশেষে তিনতলা বাড়িটা আর সন্তান দুটো তার উপরেই বর্তেছিলো ৷দাদার অবশ্য অনেক সম্পত্তি ছিলো তবুও সন্তানদের তার ছায়াও মারাতে দেননি দাদি ৷ সে সময়টাতে একটা সদ্য তালাক প্রাপ্ত নারীর জীবন চলা ছিলো দূর্ভিষহ কিন্তু আমার দাদি এ প্রতিকূল পরিবেশেই শক্ত হাতে গড়ে তুলে ছিলেন আমার বাবা ও চাচাকে ৷বাড়ি ভাড়ার সাথে নিজের হাতে সেলাইয়ের কাজ করে সংসার চালিয়েছিলেন ৷ছেলেদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত যেমন করেছিলেন তেমনি নৈতিকতার দিকদিয়েও সঠিক পথে চালিয়েছিলেন ৷ছেলেরা যখন নিজেদের সংসার গড়ে তুলেছে তখন তাদেরকে আলাদা করে দিয়ে নিজের মতো ছিলেন ,কারো সংসারে তিনি নিজেকে জরাতে চাননি ৷দাদি ছিলেন একজন সাহসী ও প্রতিবাদী নারীর প্রতিমূর্তি ৷আমার জন্মের সময় মায়ের পেটে টিউমার ধরা পরে ৷বিধায় একসাথে অপারেশনের পর অনেকটা সময় মা ছিলেন অসুস্থ যেখানে তাকে সামলাতেই একজন লোকের দরকার সেখানে আমাকে সামলানো ছিলো অসম্ভব ব্যাপার ৷সে সময়টাতে আমাকে দেখভাল করার দায়িত্বটা সেচ্ছায় নিজের কাধে তুলে নিয়েছিলেন দাদি ৷বলতে গেলে দাদির হাতেই আমি মানুষ তাই দাদির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুলো কিছুটা হলেও রপ্ত করতে পেরেছিলাম বটে ৷জীবন প্রথম শিক্ষাটা পেয়েছিলাম নিজের আত্নসম্মানের কখনো অমর্যাদা না করার ৷দাদি সব সময় বলতেন ছেলেদের মন রংধনুর সাত রঙ্গের মতো ,কখন এর পরিবর্তন হবে কেউ বলতে পারে না ৷তাই কখনো কোন ছেলেকে এতোটাও বিশ্বাস করোনা যে সে তোমার দূর্বলতা হয়ে দাড়ায় ৷নিজেকে গড়ার আগে কখনো কারো প্রেমের জালে পা দিও না ৷নিজের আত্মমর্যাদার সাথে কখনো আপোস করো না ৷দিদিভাইয়ের এরকম শিক্ষায় বড় হওয়া আমিটার জীবনে আবেগের সময়টাতে প্রেম আসনি ৷আসেনি বললে ভূল হবে আসতে দেইনি ৷কিন্তু দিদির যাওয়ার পর বোধহয় নিজের সমস্ত শিক্ষাকে হারিয়ে ফেলেছিলাম তাই আবেগে গা ভাসিয়েছিলাম প্রেমের সাগরে যার ফল এ ধোঁকা ৷
এইচ এস সি পরীক্ষার কয়েকমাস আগে শ্রাবণের একদিনে বাড়ি ফিরছিলাম ৷হঠাৎ করেই মাঝপথে বৃষ্টির সম্মুখীন হলাম ,আশেপাশে কোথাও দাড়ানোর জায়গা না পেয়ে ভিজে ভিজেই বাড়ি ফিরার জন্য পা বাড়িয়েছিলাম ৷কিন্তু প্রচন্ড বৃষ্টিতে গায়ের সাদা কলেজ ড্রেসটা ভিজে বিশ্রী অবস্থার সৃষ্টি করেছিলো ৷আশেপাশের লোকেদের বাজে নজরে যখন অসহায় বোধ করছিলাম ,ব্যাগ দিয়ে নিজেকে ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছিলাম আর নিজের দলাপাকানো কান্না গুলোকে আটকানোর বৃথা চেষ্টা করছিলাম ঠিক তখনই আমার সামনে দেবদূত হিসেবে হাজির হয়েছিলো রায়ান ভাই ৷আমাকে এ অবস্থায় দেখে হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন আমার সমস্যার কথা তাই নিজের গায়ের শার্টটা খুলে আমার গায়ে জড়িয়ে দিয়েছিলেন সাথে রেইনকোর্টও ৷তারপর আমাকে বাইকে করে বাড়ি নিয়ে এসেছিলেন ৷ঐ সময়টাতে আমার হৃদয় থমকে গিয়েছিলো, হাজারটা আজানা অনুভূতি ঘিরে ধরেছিলো চারপাশটাতে ৷তারপর যখন প্রথমবারের মতো কোন ছেলের বাইকের পেছনে বসে বৃষ্টি বিলাস করতে করতে বাড়ি ফিরেছিলাম তখন বুঝতে পেরেছিলাম ভালোবাসা নামক অসুখটা আমাকে সত্যি কাবু করেছে ৷
রায়ান ভাইকে ভালোবাসতে শুরু করলেও তাকে নিজের অনুভূতির কথা জানানোর কোন ইচ্ছে আমার মধ্যে ছিলো না ৷হয়তো ভয় পেতাম তার মুখ থেকে না শব্দটা শুনতে ৷তারপর দু'বছর ধরে চলল আমার লুকোচুরি প্রেমের গল্প ৷দূর থেকে রায়ান ভাইকে দেখতাম ,বাহানায় তার সাথে কথা বলতাম তো তার কাছের জিনিস গুলো ছুঁয়ে দেখতাম ৷ভেবেছিলাম আমার এ একতরফা অনুভূতির কোন পরিনাম নেই তাই এসব আবেগ ভোলা উচিৎ কিন্তু ঠিক এমন সময়টাতেই রায়ান ভাই আমাকে তার ভালোবাসার কথা বলেছিলো ৷তখন আমার মনেছিলো আমি বুঝি স্বপ্ন দেখছি ৷এটা রঙিন স্বপ্ন যা আমার মনের আকাশে শত রঙের বর্ষন ঘটিয়েছিলো কিন্তু কে জানতে স্বপ্নের আরালে ধূসর এক তম্রসা ৷যে ছেলেটা একদিন আমাকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়ে আমার জীবনে ভালোবাসা নামক অনুভূতির সৃষ্টি করেছিলো সেই সবার সামনে আমাকে ও আমার সম্মানকে চরম লজ্জার সম্মুখীন করেছিলো ৷সাথে বেড়াজালে বন্ধ করেছিলো আমার অনুভূতির পসরাটাও ৷তাই নিজের মনের সকল দরজা বন্ধ করলাম যেখানে না প্রশ্রয় পাবে প্রেম নাম কোন অনুভূতি আর না ক্ষমা করাবে কোন বেইমানকে ৷
**
সকালে ঘুম থেকে উঠার পরই শুনতে পেলাম আমার মায়ের উওরা যাওয়ার ঘ্যানঘ্যানানি ৷
"কিরে কথা কি তোদের দু বোনের কানে যায় না ৷উঠ তাড়াতাড়ি গোছগাছ কর ৷যেতে হবে না ৷বেলা বাজে দশটা এখনো পরে পরে ঘুমাচ্ছিস "
উওরা আমার নানা বাড়ি ৷আমাদের পুরান ঢাকা থেকে দূরে হওয়ায় আর রাস্তার জ্যাম এর কারনে বেশি একটা যাওয়া হয়না এখন আর সেখানে কিন্তু হঠাৎ করে মায়ের উওরা যেতে চাওয়ার কারন বুঝতে পারলাম না ৷
"এখন আবার উওরা যেয়ে কি করবা ৷জেরিনের কোচিং আছে না ৷"
"এতোদিন ধরে আমি কি বলতাছি তোদের তো আমার কোন কথাই কানে যায় না ৷বলি আহান এসেছে এতোদিন পর ছেলেটাকে দেখতে যাবো না ৷দুই একদিন স্কুল কলেজে না গেলে কিছু হয় না ৷তোমারা দুবোন যে কোন বিদ্যাসাগর তা আমার জানা আছে ৷ঘর গুছিয়ে রেডি হ ৷জেরিন কলেজ থেকে আসলেই বের হবো "##mizan

Jihan1
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?
Jihan1
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?
Jihan1
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?
Jihan1
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?
Jihan1
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?
Jihan1
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?
Jihan1
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?
Jihan1
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?
Jihan1
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?
Jihan1
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?