9 在 ·翻译

হাঁস আর সোনার ডিম

একবার ছিল এক গরিব কৃষক। তার ছোট্ট একটা কুঁড়েঘর, পেছনে একটু জমি আর সামনে একটা খোপে বাঁধা ছিল একটা হাঁস। হাঁসটা ছিল একেবারে সাধারণ, তবে একদিন সকালে কৃষক দেখতে পেল—হাঁসটা পেড়েছে একটা চকচকে সোনালী ডিম!

প্রথমে সে ভাবল, এ তো কাঁচের ডিম। কিন্তু বাজারে নিয়ে গেলে জহুরিরা বলল, “না হে, একেবারে খাঁটি সোনা!” কৃষক তো অবাক! নিজের ভাগ্যেই বিশ্বাস হচ্ছিল না। সে ডিমটা বিক্রি করে একটা ভালো দাম পেল। কিছু টাকা জমাল, কিছু দিয়ে চাল, ডাল, নুন, তেল কিনল।

এরপর থেকে হাঁসটা প্রতিদিন একটা করে সোনার ডিম দিতে লাগল। কৃষক আর তার স্ত্রী দিনে দিনে স্বচ্ছল হয়ে উঠল। মাটির ঘর হলো টিনের, পরে হয়ে গেল পাকা দোতলা। খাবার-পোশাক-আসবাব, সব কিছুতেই এল পরিবর্তন। আশপাশের মানুষ হিংসে করতে লাগল। কেউ কেউ বলল, “তোমার হাঁস তো ভাগ্য এনে দিয়েছে!”

কিন্তু মানুষ সবসময় সন্তুষ্ট থাকে না। একদিন কৃষক ভাবল, “যদি হাঁসটা প্রতিদিন একটা করে সোনার ডিম পাড়ে, তাহলে ওর পেটের ভেতরে নিশ্চয় অনেক সোনার ডিম জমে আছে। সব একসাথে বের করে ফেললেই তো আমি এক রাতেই বড়লোক হয়ে যাব!”

স্ত্রী তাকে মানা করল, “না না, এমন করো না। লোভে পড়ে সব হারিয়ে ফেলতে পারো।” কিন্তু কৃষক তখন চোখে মোহের পর্দা টেনে ফেলেছে। সে বলল, “বোকামি কোরো না। আমি ঠিক জানি কী করতে হবে।”

পরদিন ভোরে হাঁসটা ঘুমিয়ে থাকতেই কৃষক ছুরি নিয়ে তার পেট চিরে ফেলল। রক্তে ভেসে গেল মাটি, আর হাঁসটা নিথর হয়ে গেল।

কিন্তু কৃষক যেটা আশা করছিল, সেটা পেল না। হাঁসটার ভেতরে কোনো সোনার ডিম ছিল না। শুধু সাধারণ পেটের অংশ, হজমের নলি আর প্রাণহীন অঙ্গ। সোনা তো দূরের কথা, হাঁসটাও গেল।

কৃষক বসে পড়ল হাঁটু গেড়ে, মাথায় হাত দিয়ে। স্ত্রীর চোখে জল। বাড়ি, জিনিসপত্র সব থাকলেও মূল উৎস তো চলে গেল। এরপর আর একটা সোনার ডিমও তাদের ঘরে আসেনি।

গ্রামের লোকেরা বলল, “লোভে পড়লে শেষ পরিণতি এই-ই। যার প্রতিদিন এক মুঠো পায়, সে যদি একাই সব চাইতে চায়, শেষমেশ সে খালি হাতে ফিরে যায়।”

#sifat10