জুতো বদলানো বুড়ো
এক বৃদ্ধ লোক ছিল গ্রামের এক মজার চরিত্র। হেঁটে হেঁটে সে প্রতিদিন বাজারে যেত—তার একমাত্র সঙ্গী, পুরোনো একজোড়া জুতো। জুতোগুলো এত পুরোনো যে ছাল উঠে গেছে, তলা ছিঁড়ে গেছে, হেঁটে হেঁটে আওয়াজ করে। গ্রামের ছেলেরা তাকে দেখলেই বলত, “বুড়ো কাকা, আপনার জুতো নাচে তো!” বুড়ো হেসে বলত, “জুতো যদি না নাচে, তবে পা চলবে কী করে?”
একদিন বাজার থেকে ফিরে সে দেখল, তার জুতো জোড়া চুরি গেছে! বাড়িতে বসে সে চিন্তা করল, “আহা, এত পুরোনো জুতো কেউ নিল কেন?” মাথায় খেলল এক বুদ্ধি। পরদিন সে বাজারে গেল খালি পায়ে, হাতে এক জোড়া নতুন চকচকে জুতো।
বাজারের মাঝখানে দাঁড়িয়ে সে চিৎকার করে বলল, “হে চোর ভাই, তোমার জন্য পুরস্কার এনেছি! আমার কালকের জুতো যদি কেউ ফেরত দেয়, আমি তাকে এই নতুন জোড়া উপহার দেব।”
লোকে ভিড় করল, কেউ হেসে, কেউ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, “পুরোনো জুতো দিয়ে নতুন দেবে?” বুড়ো বলল, “হ্যাঁ, কারণ সেই জুতোর স্মৃতি আছে—আমার প্রথম প্রেমিকার সঙ্গে দেখা, ছেলের জন্মদিন, মেয়ের বিয়েতে হাঁটা... সব ওই জুতোর সঙ্গেই।”
এ কথা শুনে সবাই চুপ। এরমধ্যে এক লোক মাথা নিচু করে সামনে এল। হাতে পুরোনো জুতো। বলল, “আমি শুধু মজা করে নিয়েছিলাম, মাফ করে দিন।”
বুড়ো হাসল, “তুমি আমাকে নয়, তোমার লোভকেই ঠকিয়েছো।” সে নতুন জুতো তাকে দিল না, বরং বলল, “এই পুরোনো জুতো আমার, আর শিক্ষা তোমার!”
চোর চলে গেল লজ্জায় মুখ ঢেকে। আর বুড়ো হাঁটতে লাগল পুরোনো জুতো পায়ে, মাথা উঁচু করে, যেন প্রতিটি ধাপে শোনা যায়—“অহংকার নয়, স্মৃতিই আসল পাথেয়।”
#sifat10
Raj000
supprimer les commentaires
Etes-vous sûr que vous voulez supprimer ce commentaire ?