9 w ·Traducciones

সাপ ও বাঁশিওয়ালা

এক ছোট্ট গ্রামে হঠাৎ একদিন দেখা গেল, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর একটা বড় সাপ এসে গ্রামের পথঘাট দখল করে নেয়। লোকজন ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতো না। দোকানপাট বন্ধ, মেলামেশা বন্ধ, যেন এক আতঙ্কগ্রস্ত জনপদ।

গ্রামবাসীরা অনেক চেষ্টা করল—ওঝা আনল, আগুন জ্বালাল, লাঠি নিয়ে তাড়া দিল—কিন্তু কিছুতেই সাপটা পালায় না। বরং গর্জে উঠে, ফণা তোলে, মানুষ তাড়া করে। একসময় সবাই হাল ছেড়ে দিল।

তখন একদিন, বাইরে থেকে এক বাঁশিওয়ালা এল। পরনে ছেঁড়া জামা, চোখে চঞ্চল দৃষ্টি। সে বলল, “আমি শুনেছি, এখানে এক ভয়ংকর সাপের উপদ্রব চলছে? আমি সেটা তাড়াতে পারি, তবে কিছুই চাই না—শুধু যদি এক বেলা খাবার দাও।”

লোকজন তাকে অবিশ্বাস করল। কেউ বলল, “তুই কি ওঝা? না পাগল?” বাঁশিওয়ালা হাসল, “আমি স্রেফ একজন বাঁশিওয়ালা।”

সেদিন সন্ধ্যায় সে গ্রামের মাঝে দাঁড়িয়ে বাঁশি বাজাতে শুরু করল। মধুর, মনকাড়া সুর। কিছুক্ষণ পরই দেখা গেল, সেই ভয়ঙ্কর সাপটা যেন মোহিত হয়ে ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে আসছে। সাপটা আর কাউকে ভয় দেখাল না, ফণা তুলল না, বরং বাঁশির সুরে দুলতে লাগল।

বাঁশিওয়ালা বাঁশি বাজাতে বাজাতে গ্রাম থেকে দূরের এক জঙ্গলের দিকে হাঁটল। সাপ তার পেছনে পেছনে চলল। সবাই নিঃশ্বাস আটকে দেখল। যখন সে সাপকে দূরে নিয়ে গিয়ে বাঁশি থামাল, তখন সাপটা গর্তে ঢুকে আর বের হলো না।

গ্রাম আনন্দে ফেটে পড়ল। এক বুড়ো বলল, “কী জাদু করলি?” বাঁশিওয়ালা হেসে বলল, “জাদু নয়, সুর। ভয়কে ভয় না দেখিয়ে যদি মায়া দেখাও, তখন সে আপনিই শান্ত হয়ে যায়।”

সে শুধু এক থালা খিচুড়ি খেয়ে হেসে হেসে চলে গেল।

#sifat10