বুড়ো গাছ আর নম্র বাতাসের গল্প
একসময় এক ছোট গ্রামে ছিল এক বিশাল বুড়ো গাছ। বছর ঘুরে বছর, সেই গাছ সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল নিঃসন্দেহে গ্রামের সবচেয়ে বড় আর পুরনো গাছ। তার শাখা-প্রশাখা এত বড় হয়ে গিয়েছিল যে, গ্রীষ্মের দুঃসহ রোদ থেকে গ্রামবাসীদের অনেকেই তার ছায়ায় আরাম পেত। গাছটি শীতেও গ্রামবাসীর আশ্রয়স্থল ছিল, কারণ তার পাতাগুলো অনেক দিন পর্যন্ত ঝড়ে না পড়ে।
এই গাছের পাশে বসত এক নম্র বাতাস। এই বাতাস ছিল খুব শান্ত আর কোমল। গাছের শাখা-পাতাগুলোকে ছুঁয়ে যেত, মাঝে মাঝে মৃদু সুরে গান গাইত। গাছ আর বাতাসের মাঝে অনেক বছর ধরে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল।
একদিন হঠাৎ করেই এক ভয়ানক ঝড় উঠল। বাতাস শক্ত হয়ে গেল, আর ঝড়ের সঙ্গে গাছের শাখাগুলো কেঁপে উঠল। বাতাস খুব তীব্র হয়ে বুড়ো গাছকে দোলাতে লাগল। অনেক পাতাও ঝড়ে গেল গাছ থেকে। গাছ কষ্টে কাঁপতে কাঁপতে বলল, “বাতাস ভাই, তুমি কি আমাকে এত ক্ষতি করছো? আমি এত বছর ধরে এখানে দাঁড়িয়ে আছি, আর আজ তুমি আমাকে আঘাত করছো?”
বাতাস একটু নম্র হয়ে বলল, “প্রিয় গাছ, আমি আসলে তোমাকে আঘাত দিতে চাইনি। আমি তোমার শক্তি যাচাই করছি। প্রকৃত শক্তি শুধু দমনে নয়, নম্রতায় ও ধৈর্য ধারণে। ঝড়ের পরেও তুমি দাঁড়িয়ে আছো, এইটাই তোমার আসল শক্তি।”
গাছ ভাবল, “আমি সবসময় বলতাম আমার শক্তি আমার শাখা-প্রশাখা আর পাতা, কিন্তু আসলে প্রকৃত শক্তি হলো নম্রতা ও সহিষ্ণুতা।”
ঝড় শেষ হওয়ার পর গাছ আর বাতাস একসঙ্গে আবার মৃদু সুরে গান গাইতে লাগল। গ্রামের মানুষও গাছের কাছে এসে বলল, “তুমি আমাদের জীবনের আশ্রয়, তুমি আমাদের শক্তি।”
এই গল্প থেকে আমরা শিখি, প্রকৃত শক্তি হলো নম্রতা, ধৈর্য আর কঠিন সময়েও দাঁড়িয়ে থাকা।
#sifat10