জলের কলস আর রাজকুমারীর কৌশল
এক রাজ্যে ছিল এক রাজকুমারী, নাম তার নুরজাহান। রূপে যেমন অপূর্ব, বুদ্ধিতে তেমনি তীক্ষ্ণ। অনেক রাজপুত্র তার কাছে প্রস্তাব নিয়ে এলেও সে একেক জনকে একেক ধাঁধায় ফেলত, আর সবাই হার মেনে ফিরত।
একদিন দূর রাজ্যের এক রাজপুত্র, আরিয়ান, প্রস্তাব নিয়ে এলো। রাজকুমারী বললো, “তুমি যদি সত্যিই বুদ্ধিমান হও, তবে এই কাজটি করো—এই মাটির কলসটি ভরে আনো, তবে শর্ত হলো: কলসটিতে ফুটো আছে, জল যেন এক ফোঁটাও না ঝরে।”
রাজপুত্র চমকে গেলো। ফুটো কলসে পানি এনে দেওয়া কি সম্ভব? তবুও সে নদীতে গেলো, পানি তুললো, কিন্তু যতবারই ফেরে, পানি পড়ে যায়।
সে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত, নদীতেই বসে পড়ে।
তখন এক বৃদ্ধা এসে জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে বাবা?”
আরিয়ান বললো, “রাজকুমারীর ধাঁধার জবাব দিতে পারলাম না। ফুটো কলসে পানি এনে দেওয়া তো অসম্ভব!”
বৃদ্ধা হেসে বললো, “অসম্ভব কিছু নেই। কলসটা বড় পাত্রে রাখো, তারপর ওটা ভর্তি করো। পাত্রে থাকলে পানি তো আর গড়াবে না!”
আরিয়ান চোখ খুলে গেলো। সে মাটির কলসটা একটি বড় লোহার পাত্রে রেখে তাতে পানি ভরলো—এক ফোঁটাও পড়লো না বাইরে। সেইভাবেই সে রাজপ্রাসাদে ফিরলো।
রাজকুমারী খুশি হয়ে বললো, “তুমি প্রমাণ করেছো, বুদ্ধি শুধু মুখে নয়, কাজে লাগাতে জানো।”
এরপর রাজা তাদের বিয়ে দেন। আর রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে—জল যেমন কলসে থাকে, তেমনি বুদ্ধি থাকে মনে, কাজে লাগলে তবেই সে মূল্যবান হয়।
এই কিস্সা শেখায়—চাপ নয়, কৌশলই সমস্যার আসল সমাধান।
#sifat10