জলের হাঁস আর কুয়োর ব্যাঙ
এক গ্রামে ছিল একটি পুরনো কুয়ো। সেই কুয়োতেই বাস করত এক ব্যাঙ, নাম তার ফটিক। সে নিজেকে ভাবত জগৎজয়ী—কারণ তার কুয়োর পানিতে আর কেউ ছিল না। সে বলত, “এই কুয়োই সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে গভীর, আর আমি এর রাজা!”
গ্রামের সবাই জানত, ফটিক খুব অহংকারী। কেউ তার সঙ্গে কথা বললেও সে গর্জে উঠত, “আমার কুয়ো ছাড়া কিছু নেই, বাকি দুনিয়া শুধু গল্প!”
একদিন হঠাৎ বৃষ্টি এলো, নদী উপচে পানি এল কুয়োতেও। সঙ্গে ভেসে এলো একটি জলহাঁস। হাঁসটি কুয়োতে একটু বিশ্রাম নিতে এল, আর তখনই ফটিক তাকে দেখে চিৎকার করে উঠল, “এই কুয়ো আমার! তুমি কে?”
হাঁসটি নম্র গলায় বলল, “আমি দূরের হাওর থেকে এসেছি। নদী, হ্রদ, সাগর ঘুরে বেড়াই।”
ফটিক হেসে বলল, “সাগর? নদী? এগুলো শুধু গল্প! কুয়োর বাইরে কিছু নেই!”
জলহাঁস মৃদু হেসে বলল, “তুমি যদি চাও, তবে আমার পিঠে চড়ে একবার ঘুরে দেখো। বিশ্বাস না করলেও অন্তত দেখে বোঝো।”
ফটিক অনেক দ্বিধায় পড়ল, কিন্তু কৌতূহলে উঠল হাঁসের পিঠে। হাঁস তাকে নিয়ে উড়ে চলল—নদীর গর্জন, হ্রদের বিস্তার, সাগরের ঢেউ—সব দেখে ফটিক স্তব্ধ হয়ে গেল।
ফিরে এসে সে আর কখনো বলে না, “আমার কুয়োই সব।” সে সবার প্রশ্ন শুনে, নিজে দেখে আর শেখে।
এই কিস্সা শেখায়—আপনার জগত যতই চেনা হোক না কেন, চোখ খুলে দেখলে সত্যিকারের দুনিয়া অনেক বড়, অনেক বিস্ময়কর। অহংকার নয়, শেখার মনই মানুষকে বড় করে।
#sifat10