শেষ আলো
রোজার মাস। শহরের গলি-নালা, ব্যস্ত রাস্তা, হাটবাজার সবাই আলোকিত। কিন্তু শহরের এক কোণে, ছোট্ট একটা ঘরে বসে আছে মাহি। তার বয়স মাত্র আট বছর, কিন্তু চোখে ঝলসে ওঠে অসাধারণ সাহস।
মাহির বাবা অনেকদিন ধরেই অসুস্থ, আর মা দুবেলা দুমুঠো রোজগার করে সংসার চালায়। বিদ্যুৎ চলে যায় প্রায়ই, তাই মাহি মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়ে বসে স্কুলের পড়াশোনা করে।
একদিন রাতে বিদ্যুৎ গ্যাস নষ্ট হয়ে যায়। মাহি ঘরের অন্ধকারে একা বসে থাকে। হঠাৎ বাইরে থেকে দূরে দূরে বাজতে শুরু করে মসজিদের আজানের সুর। মাহির মনে হয়, যেন সেই সুরই তার ভিতর অন্ধকার দূর করছে।
পরদিন সকালে মাহি বিদ্যুৎ ফিরে না আসার কথা জানিয়ে স্কুলে যায়। ক্লাসরুমে শিক্ষকদের কেউ কেউ হতাশা নিয়ে কথা বলেন। কেউ বলেন, “আজ তো বিদ্যুৎ নেই, পড়া হবে না।” কিন্তু মাহি উঠে দাঁড়িয়ে বলে, “আলো না থাকলেও আমাদের মন আলোকিত রাখতে হবে। বিদ্যুৎ শুধু বাতি, আসল আলো হলো আশা।”
সেই কথাটা পুরো স্কুলে ছড়িয়ে পড়ে। সবাই মাহির সাহস দেখে অনুপ্রাণিত হয়। সেইদিন থেকে স্কুলে একটা নতুন নিয়ম হয়—বিদ্যুৎ না থাকলেও পড়াশোনা চলবে।
মাহি বুঝতে পারে, জীবনের সবচেয়ে বড় আলো আসে মন থেকে। বিদ্যুৎ হারালে হারায় না আশার আলো।
#sifat10