8 sa ·Isalin

রেডিওওয়ালা রহস্য

গ্রামের বুড়ো মকবুল চাচা এক সময় শহরে চাকরি করতেন। অবসরে গ্রামে ফিরে এসেছেন বহু বছর হলো। তার একটাই নেশা—পুরনো একটা লাল রঙের রেডিও। দিনের অনেকটা সময় তিনি সেটা কানে লাগিয়ে বসে থাকেন। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলেন, “সংবাদ শুনি!”

কিন্তু রেডিওটা বহু পুরোনো, কোন চ্যানেলই ধরেনা। তারপরও চাচা প্রতিদিন সেটি কানে দিয়ে এমনভাবে শোনেন যেন পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সেখানেই প্রচার হচ্ছে।

গ্রামের লোকজন অবাক হয়ে ভাবে, “এই রেডিওটা কি আসলেই কাজ করে?”

ছোট ছেলেপেলেরা একদিন চাচার অনুপস্থিতিতে রেডিওটা নিয়ে এল, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখল, কিন্তু কোনো আওয়াজ পেল না। তখন রহিম নামের এক দস্যি ছেলে বলল, “চলো রেডিওটা খুলে দেখি, ভেতরে আসলে কিছু আছে কি না।”

রেডিও খুলতেই বেরিয়ে এল পুরনো এক চিঠি, একটা ছোট সাদাকালো ছবি আর কয়েকটা কাগজ! চিঠিটা ছিল মকবুল চাচার প্রিয়তমা স্ত্রীর, যিনি বহু বছর আগে মারা গেছেন।

চিঠিতে লেখা—
“তুমি শহরে থাকো, আমি গ্রামে। মাঝে মাঝে চিঠি পাই, মাঝে মাঝে পাই না। এই রেডিওটা খুললে যেন সব কথা মনে পড়ে যায়...”

ছেলেরা দৌড়ে গিয়ে রেডিওটা ফিরিয়ে দিল। চাচা হাসলেন, বললেন, “এই রেডিওতে শব্দ নেই ঠিকই, কিন্তু স্মৃতির আওয়াজ আছে। আর সে আওয়াজ শুধু হৃদয়ে শোনা যায়।”

সেদিন থেকে কেউ আর চাচার রেডিও নিয়ে প্রশ্ন করে না। বরং চুপিচুপি এসে পাশে বসে, আর ভাবে—কী রহস্যময় এই শব্দহীন শ্রুতি!

#sifat10