8 i ·Översätt

হাইরান হাশেমের হরিণ শিকার

হাশেম মাঝি নদীর ধারে ছোট্ট এক গ্রামে থাকেন। বয়স পঞ্চাশ পেরোলেও গলার জোর আর হাসির শব্দে পুরো গ্রাম কাঁপে। ছোটবেলায় একবার চিড়িয়াখানায় গিয়ে হরিণ দেখেছিলেন, সেই থেকেই তার স্বপ্ন—একদিন সে নিজেই হরিণ শিকার করবে।

গ্রামের লোকেরা বলে, “হাশেম ভাই, নদী পার হয়ে বনের ধারে হরিণ আসে, কিন্তু ধরতে গেলে উল্টা আপনি হারিয়ে যাবেন!”
হাশেম বলে, “আমি বাঘ না, হরিণ ধরব। তাও বন্দুক ছাড়া, ফাঁদ ছাড়া—শুধু চালাকি দিয়ে।”

একদিন সকালে সবাই দেখে, হাশেম মাঝি পিছে এক ঝুড়ি কাঁচা তরমুজ, সামনে একটা রশি, আর কোমরে বাঁধা একটা বাঁশি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন। প্রশ্ন করলে বলেন, “হরিণ ধরতে যাচ্ছি, আজ ফিরেই হরিণের দুধ দিয়ে চা খাবো!”

লোকজন হেসে গড়াগড়ি খায়। কেউ বলল, “এইটা বুঝি নতুন নাটক!”

তিনদিন হাশেমের কোনো খবর নেই। সবাই চিন্তায়। চতুর্থ দিন সকালে হাশেম নদী পাড়ি দিয়ে ফিরলেন—কাঁধে ঝুলছে কিছু লতাপাতা, জামাকাপড় ছেঁড়া, আর চোখে চশমা নাই।

জিজ্ঞেস করতেই বললেন, “একটা হরিণের পিছে দৌড়াতে গিয়া আমি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খাইলাম। হরিণ নাই, আমি নিজেই শিকার!”

সবাই হেসে কুটি কুটি।
কিন্তু পরদিন, সে নিয়ে এল একটা কাঠের হরিণ, নিজ হাতে বানানো! বলল, “হরিণ ধরলাম ঠিকই, কিন্তু কাঠে। এইবার নিজের উঠানে রাখব, পলায় যাবে না!”

এরপর থেকে গ্রামের শিশুরা বলে, “হাশেম কাকা হরিণ ধরেছে—সপনেও, বাস্তবেও!”

আর হাশেম মাঝি? এখনো বাঁশি বাজিয়ে বলেন, “সত্যিকারের হরিণ না হোক, গল্পের হরিণ তো ধরা গেছে!”

#sifat10