পাগলা কবি পেয়ারার পালা
গ্রামের নাম খরতলা। সেখানে থাকেন এক অদ্ভুত মানুষ—পেয়ারা কবি। পাকা নাম মোবারক হোসেন, কিন্তু গ্রামে কেউ এই নামে চিনে না। সে সারাক্ষণ গাছের নিচে বসে, হাতে কলম আর পাশে পাকা পেয়ারার ঝুড়ি। একেকটা পেয়ারা নিয়ে সে এমনভাবে দেখে, যেন তা কোনো রাজকুমারীর মুখ!
তার কবিতার শুরু সবসময় পেয়ারাকে নিয়েই—
“ওহে সুবাসিত গোল গোল ফল,
তোমায় খেয়ে প্রেমে পড়ি প্রতি পল…”
লোকজন হাসে, কেউ আবার বলেন, “এই পাগলা কবি আসলে পেয়ারার নেশায় পড়ে গেছে।”
একবার ইউনিয়নের সাংস্কৃতিক মেলায় ঘোষণা এলো—“নিজের লেখা কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা হবে।” পেয়ারার কবি তো মহা খুশি। সে নিজের সেরা কবিতা নিয়ে হাজির।
মঞ্চে উঠে বলতে শুরু করল—
“পেয়ারা তুমি শুধু ফল নও, তুমি অনুপ্রেরণা, তুমি কবিতার চালচিত্র…”
কিন্তু ততক্ষণে কিছু ছেলে হেসে উঠল। কেউ বলল, “পেয়ারা নিয়ে আবার কবিতা হয় নাকি রে ভাই!”
কবি থেমে গেলেন না। গলা উঁচু করে বললেন, “এই যে হাসছেন, আপনারা জানেন না, পৃথিবীতে যত প্রেমের গল্প, তার মধ্যে সবচেয়ে মধুর গল্প লুকিয়ে আছে পেয়ারার মতো সাধারণ জিনিসে!”
মঞ্চ নেমে এসে তিনি গাছের নিচে বসলেন। পরদিন সকালের পত্রিকায় একটা প্রতিবেদন—
“পেয়ারা নিয়ে পাগলামি নয়, এক পলকেই দর্শক মন জয় করলেন কবি মোবারক”
সেই থেকে গ্রামের স্কুলে তাকে সবাই “গেস্ট কবি” ডাকে। আর পেয়ারা? এখন তা শুধু ফল নয়, খরতলার কবিতার প্রতীক!
#sifat10