---
শিরোনাম: “বীজের প্রতিশ্রুতি”
সুজন একজন সাধারণ গ্রামবাংলার কৃষক। ছোট একটি জমিতে সে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করে। তার জীবনের মূল অবলম্বন—জমি আর ফসল। বছরের পর বছর ধরে সে ধানের চাষ করে এসেছে, কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে প্রকৃতি যেন তার সঙ্গে প্রতারণা করছে। কখনো অতিবৃষ্টি, কখনো খরায় নষ্ট হয়ে যায় তার ফসল। কিন্তু সুজন থেমে থাকেনি। প্রতিবারই সে নতুন করে চেষ্টা করেছে।
এই বছর গ্রামে নতুন এক কৃষি কর্মকর্তা আসে, নাম সায়মা। তিনি কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ শেখাতে আসেন। শুরুতে গ্রামের অধিকাংশ কৃষক তার কথায় কান দেয় না, কারণ তারা পুরোনো অভ্যাসে বিশ্বাসী। কিন্তু সুজন ছিল ব্যতিক্রম। সে চুপচাপ সায়মার কথা শুনে এবং চিন্তা করে দেখে—পুরোনো পদ্ধতিতে সে তো সফল হতে পারছে না, নতুন কিছু চেষ্টা করলে ক্ষতি কী?
সুজন তার জমিতে সায়মার দেওয়া উন্নত বীজ ব্যবহার করে এবং তার শেখানো পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করে। অন্যান্য কৃষকরা তাকে নিয়ে ঠাট্টা করে—“সায়েন্সের চাষ কইরা কী হবে? মাটি চেনে হালচাষ, বই পড়ে না।”
কিন্তু সুজন হাল ছাড়ে না। সে নিয়মিত জমিতে পানি দেয়, মাটি পরীক্ষা করে, কীটনাশক ব্যবহার করে সময়মতো। তিন মাস পর সেই জমি যখন সবুজে ভরে যায়, আর চারদিকে ধানের শিষে সোনা ঝরে—তখন গ্রামের লোকেরা থমকে দাঁড়ায়।
হাটের দিনে যখন সুজনের ধান বিক্রি হয় বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে, তখন তার মুখে এক অদ্ভুত আত্মবিশ্বাস দেখা যায়। সায়মা এসে হাসিমুখে বলে, “আমি তো বলেছিলাম, কৃষির ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেই গড়া যাবে।”
সুজন সেদিন একা ছিল না। গ্রামের আরও পাঁচজন কৃষক তার পাশে দাঁড়ায়—“আমরাও শিখতে চাই।”
সেই দিন থেকে সুজন শুধু একজন সফল কৃষক নয়, হয়ে ওঠে এক অনুপ্রেরণা। গ্রামের তরুণরা তার থেকে শেখে কীভাবে বিজ্ঞান ও পরিশ্রমের সমন্বয়ে কৃষি হতে পারে লাভজনক, সম্মানজনক একটি পেশা।
একটি সাহসী সিদ্ধান্ত ও একজন সৎ কৃষি কর্মকর্তার সহায়তায় বদলে যায় একটি গ্রামের ভবিষ্যৎ।
MD Nafis islan
댓글 삭제
이 댓글을 삭제하시겠습니까?