সোনার হাঁসের প্রতিশোধ
একদা এক গাঁয়ে বাস করত লালু নামে এক গরিব কৃষক।
তার ছিল একমাত্র সম্পদ—a এক সোনার হাঁস।
প্রতি সপ্তাহে হাঁসটি একটি করে সোনার ডিম দিত।
লালু সেই ডিম বেচে চালাত তার সংসার।
কিন্তু তার স্ত্রীর লোভ ছিল অগাধ।
সে বলত, “হাঁস তো সোনার ডিম দেয়, তাহলে পেটের ভিতর কত ডিম!”
একদিন সে লালুকে বোঝাল, হাঁসটিকে কেটে ফেললেই একসাথে অনেক ডিম পাওয়া যাবে।
লালু দ্বিধায় পড়ে গেল, কিন্তু স্ত্রীর জোরাজুরিতে রাজি হয়ে গেল।
পরদিন ভোরে হাঁসটিকে মারল তারা।
কিন্তু পেট কাটতেই হতাশা—একটিও সোনার ডিম নেই।
স্ত্রী চিৎকার করে কাঁদতে লাগল, “আমরা ধ্বংস হয়ে গেলাম!”
লালু বোব হয়ে হাঁসটার নিথর শরীর দেখছিল।
সেই মুহূর্তে আকাশ মেঘে ঢেকে গেল।
এক ঝটকায় ঝড় বয়ে গেল ঘরের ওপর দিয়ে।
সবকিছু লণ্ডভণ্ড—শুধু হাঁসের লাশ নিখোঁজ!
রাতেই স্বপ্নে এল সেই হাঁস, চোখে আগুন।
বলল, “তোমরা লোভে চোখ বন্ধ করেছো, এখন তার শাস্তি পাবে।”
ঘুম ভেঙে লালু দেখল—তার সব ধান পুড়ে ছাই!
কয়েকদিনের মধ্যে গরুগুলোও হারিয়ে গেল।
গ্রামের লোক বলত, “সোনার হাঁসের অভিশাপ লেগেছে।”
লালু পথে পথে ভিক্ষে করতে লাগল।
একদিন এক অজানা গ্রামে এক বুড়োকে দেখল সে, কাঁধে ঝুলি।
বুড়ো বলল, “তোমার হাঁসকে চিনতে পারবে?”
লালু চমকে বলল, “সে তো মরে গেছে!”
বুড়ো মুচকি হেসে ঝুলির ভেতর থেকে বের করল হাঁসটিকে—সে বেঁচে আছে!
কিন্তু এখন তার ডানা পুড়ে গেছে, আর সে ডিম দেয় না।
বুড়ো বলল, “যা নষ্ট করেছো, তা ফেরানো যায় না। কিন্তু শিক্ষা নিতে পারো।”
লালু হাঁটু গেড়ে বসে হাঁসল জড়িয়ে কাঁদতে লাগল।
সেইদিন থেকেই সে গ্রামের শিশুদের গল্প শোনাতে লাগল—
লোভ কেমন করে জীবনকে ধ্বংস করে।
সোনার হাঁস হারিয়ে সে যে জ্ঞান পেয়েছিল, তা অনেক দামি ছিল।
আর হাঁসটা? সে আর কখনও সোনার ডিম দেয়নি,
কিন্তু চোখে চোখ রাখলে আজও দেখা যায়—
একটা নিঃশব্দ প্রতিশোধ।
#sifat10
Siyam Hossain
মন্তব্য মুছুন
আপনি কি এই মন্তব্যটি মুছে ফেলার বিষয়ে নিশ্চিত?