হুজুরের ঘড়ি

এক গ্রামে এক হুজুর ছিলেন। খুব সাধু-সজ্জন মানুষ, সবার উপকার করতেন। তবে একটা অভ্যাস ছিল—ঘড়ি খুব পছন্দ করতেন। কারো ভালো ঘড়ি দেখলেই খুঁটিয়ে দেখতেন, হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে বলতেন, “ওহ, মাশাআল্লাহ! ঘড়িটা তো বেশ জমজমাট!”

একদিন গ্রামের এক যুবক নতুন ঘড়ি পরে হুজুরের কাছে এল। হুজুর ঘড়িটা দেখে খুব প্রশংসা করলেন, “এ যে একেবারে লন্ডনের মতো ঘড়ি!” তারপর হঠাৎ বললেন, “বাবা, একটু পড়ি দেখে নিই?” যুবক ভদ্রতা করে ঘড়ি খুলে দিলেন।

হুজুর হাতে নিয়ে ঘড়ি দেখতে লাগলেন, ওদিকে সময় গড়িয়ে যাচ্ছে। মিনিট কেটে গেছে, যুবক বলল, “হুজুর, আমার একটু জরুরি কাজ ছিল…”

হুজুর বললেন, “ওহ, হ্যাঁ! কিন্তু ঘড়ির টাইম তো একটু স্লো লাগছে। এটা ঠিক করতে হবে।”

তারপর পকেট থেকে একটা প্যাঁচানো ছোট স্ক্রুড্রাইভার বের করে ঘড়ির পেছনে খুলে ফেললেন। ঘড়ি খুলে কাঁটা ঘুরালেন, কিছুক্ষণ পর বললেন, “এবার ঠিক হয়েছে!”

যুবক খুশি হয়ে বলল, “আলহামদুলিল্লাহ! হুজুর তো ঘড়িও ঠিক করতে পারেন!”

হুজুর গম্ভীর হয়ে বললেন, “আমার ইচ্ছা ছিল ঘড়ির দোকান দিই। কিন্তু মানুষ মসজিদে রেখে ঘড়ি ফেরত নেয় না, তাই দোকান খুলে লাভ কী?”

সবাই হেসে উঠল। হুজুর তখন বললেন, “তবে একটা কথা—ঘড়ি যেটাই হোক, সময়ের কদর না করলে জীবনেই পিছিয়ে পড়বে।”

এ কথা শুনে যুবক ঘড়িটা হাতে নিয়ে বলল, “তাই তো হুজুর, আপনার কাছ থেকে সময় নিয়েই আমি অনেক কিছু শিখে ফেললাম।”

সেদিন থেকে হুজুরের ঘড়ির কদর আরেকটু বেড়ে গেল।

#sifat10