#অণু-গল্প: ৩ (চন্দ্রের অভিশাপ)
---
পূর্ণিমা আবার ফিরছে। নীলয় জানে, এবারই হয় মুক্তি, নয়ত চিরন্তন অভিশাপ। চরণ কাকার দেওয়া নির্দেশ মতো, সে ফিরে আসে সেই পাহাড়ি ঝরনার ধারে—যেখানে প্রথমবার রূপান্তর ঘটেছিলো।
আকাশে পূর্ণ চাঁদ, তার আলোয় আবার বদলাতে শুরু করে নীলয়ের শরীর—চোখে নখে দাঁতে জেগে ওঠে পশু। কিন্তু এবার সে প্রস্তুত। কাকার দেওয়া রূপতিলক কপালে, গলায় তুলসীর মালা—জলে দাঁড়িয়ে সে উচ্চারণ করে মন্ত্র, “হে অভিশাপ, আমার ভালোবাসা তোমার চেয়ে শক্তিশালী।”
ঠিক তখনই জলের ভেতর থেকে উঠে আসে এক কালো ছায়া—সেই বৃদ্ধা বিড়াল-রূপী আত্মা, যে অভিশাপ দিয়েছিল। সে ফোঁস করে ওঠে, “ভালোবাসা? ওটা তো তোমার ক্ষুধার মুখোশ!”
নীলয় কাঁপা গলায় উত্তর দেয়, “আমি মধুরিমাকে ভালোবাসতাম, খেতে চাইনি... তুমি আমার দেহে পশু ঢুকিয়ে মানুষটাকে মেরেছিলে।”
চাঁদের আলো প্রবল হতে হতে হঠাৎ ফেটে পড়ে ঝরনার জল। আতঙ্কে আর রাগে চিৎকার করে উঠে ছায়াটি—আর এক ঝলকে মিলিয়ে যায় বাতাসে।
নীলয় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। কয়েক মিনিট পর, জ্ঞান ফিরে এলে দেখে, সে পুরোপুরি মানুষ! দাঁত নেই, নখ নেই, পশু নেই—শুধু একটানা অশ্রু ঝরছে চোখ বেয়ে।
মুক্তি মিলেছে। কিন্তু যা হারিয়েছে—তা কোনো পূর্ণিমাই ফিরিয়ে দিতে পারবে না।