প্রাচীন যুগ খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে বঙ্গদেশ মৌর্যাধিকারে আসার পর থেকে আর্যভাষা এদেশে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে এবং এর প্রায় সহস্রাব্দ পরে প্রাকৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী (১৮৫৩-১৯৩১) কর্তৃক ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কৃত বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের পদগুলির রচনাকাল আনুমানিক খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত। এতে বৌদ্ধ সহজিয়াদের ধর্মতত্ত্ব ও সাধন-ভজনমূলক ৪৭টি পদ আছে এবং সেগুলি সুনির্ধারিত তাল, রাগ ও সুরে গীত হওয়ার উপযোগী। পদগুলির ভাব ও ভাষা সর্বত্র সহজবোধ্য নয়; কতক বোঝা যায় কতক বোঝা যায় না, তাই এ ভাষার নাম হয়েছে সন্ধ্যা ভাষা। ব্যঞ্জনাময় শব্দ-ব্যবহার, উপমা-রূপকাদি অলঙ্কারের প্রয়োগ, প্রাকৃতিক বর্ণনা, সমাজচিত্র ইত্যাদি বিবেচনায় পদগুলির সাহিত্যিক ও ভাষানিদর্শনগত মূল্য অপরিসীম। পদগুলির পদকর্তাগণ ‘সিদ্ধাচার্য’ নামে খ্যাত এবং তাঁদের কয়েকজন হলেন লুইপা, ভুসুকুপা, কাহ্নপা, শবরপা প্রমুখ।
Aysha570
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?