চর্যাপদের পরে প্রবাদ, বচন, ছড়া, ডাক ও খনার বচন ইত্যাদি কিছু কিছু কাব্যনিদর্শন থাকলেও চতুর্দশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো রচনা পাওয়া যায় না। তাই এ সময়টাকে (১২০১-১৩৫০) কেউ কেউ ‘অন্ধকার যুগ’ বলে অভিহিত করেন। প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল পরিবর্তনের যুগ; ইসলাম ও ইসলামি সংস্কৃতির সংস্পর্শে এবং মুসলিম শাসকদের ভিন্নতর রাষ্ট্রীয় ও সমাজব্যবস্থা প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে তখন এক নতুন পরিবেশ ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটছিল। সে সময় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ছিল সৃজ্যমান অবস্থায় এবং চর্যার বঙ্গীয়-বৈশিষ্ট্যময় অপভ্রংশ ভাষা আরও বেশি মাত্রায় বাংলা হয়ে ওঠে। এ যুগের প্রাপ্ত নিদর্শনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৩শ-১৪শ শতকের রামাই পন্ডিতের গাথাজাতীয় রচনা শূন্যপুরাণ। এতে বৌদ্ধদের ওপর বৈদিক ব্রাহ্মণদের অত্যাচার, মুসলমানদের জাজপুর প্রবেশ ইত্যাদি ঘটনার বর্ণনাসম্বলিত ‘নিরঞ্জনের রুষ্মা’ শীর্ষক একটি কবিতা আছে। এছাড়া আছে অপভ্রংশ ভাষায় রচিত প্রাকৃতপৈঙ্গল নামক একটি গীতিকবিতার সংকলন, যার ছন্দ ও ভাষা প্রাকৃত বা আদি পর্যায়ের বাংলা। হলায়ুধ মিশ্র রচিত সেখশুভোদয়া (আনু. ১২০৩) নামক সংস্কৃত গ্রন্থেও একটি বাংলা গান পাওয়া গেছে। এরূপ পীরমাহাত্ম্যসূচক ছড়া বা আর্যা, প্রেমসঙ্গীত এবং খনার বচন শ্রেণির দু-একটি বাংলা শ্লোকই এ সময়কার প্রধান রচনা।
Aysha570
Tanggalin ang Komento
Sigurado ka bang gusto mong tanggalin ang komentong ito?