মঙ্গলকাব্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন মনসামঙ্গল, তন্মধ্যে বিজয়গুপ্তের পদ্মাপুরাণ (১৪৯৪) সর্বাধিক জনপ্রিয়। মনসামঙ্গল এক সময় পূর্ববঙ্গের জাতীয় কাব্যের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিল। মঙ্গলকাব্যের ইতিহাসে চন্ডীমঙ্গল কাব্যধারা উৎকর্ষের জন্য বিখ্যাত। মুকুন্দরাম চক্রবর্তী (১৬শ শতক) রচিত চন্ডীমঙ্গল সর্বাপেক্ষা বিখ্যাত; এর জন্য রাজা রঘুনাথ রায় তাঁকে ‘কবিকঙ্কণ’ উপাধিতে ভূষিত করেন। অন্যান্য মঙ্গলকাব্য হচ্ছে ধর্মমঙ্গল, শিবমঙ্গল ইত্যাদি এবং এগুলির প্রধান রচয়িতারা ছিলেন ১৮শ শতকের। ধর্মমঙ্গলের আদি কবি ময়ূরভট্ট; তাঁর পরবর্তী প্রসিদ্ধ কবি ছিলেন খেলারাম চক্রবর্তী, যাঁর কাব্যের নাম গৌড়কাব্য; কিন্তু এঁদের কাব্যের পুথি পাওয়া যায়নি; একমাত্র রূপরাম চক্রবর্তীর কাব্যই পাওয়া গেছে, যার রচনাকাল ১৬৪৯-৫৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বলে ধরা হয়। রূপরাম বাস্তব দৃষ্টিতে মানব-জীবন বর্ণনা করেছেন।
কৃষিভিত্তিক সমাজজীবনে বৈদিক দেবতা রুদ্র শিবের রূপ ধারণ করে; শিব বাঙালি হিন্দুর জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাই বাঙালির সুখ-দুঃখ ভরা সংসারের কথা স্থান পেয়েছে শিবমঙ্গলে। এ ধারার প্রথম কাব্য দ্বিজ রতিদেবের মৃগলুব্ধ (১৬৭৪) পাওয়া গেছে চট্টগ্রামের পটিয়ায়। শিবায়নের শ্রেষ্ঠ কাহিনীর রচয়িতা রামেশ্বর চক্রবর্তী (১৭১০-১১)। এগুলি ছাড়া শীতলামঙ্গল (কৃষ্ণরাম দাস) ও ষষ্ঠীমঙ্গল নামে দুটি মঙ্গলকাব্যের কথাও জানা যায়। ব্যাঘ্রদেবতা দক্ষিণরায়ের কথা নিয়ে রচিত শেষোক্ত কাব্যটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ কাব্যে সমাজধর্মের সমন্বয় প্রয়াসে নিম্নশ্রেণীর হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের সহাবস্থানের কথা আছে। ফলে দক্ষিণরায়ের সঙ্গে মুসলমান পীর বড় খাঁ গাজীর পূজাও এতে স্থান পেয়েছে।
Aysha570
Ta bort kommentar
Är du säker på att du vill ta bort den här kommentaren?
Suraiya Soha
Ta bort kommentar
Är du säker på att du vill ta bort den här kommentaren?