মুসলমান কবিদের মধ্যে প্রাচীনতম হচ্ছেন শাহ মুহম্মদ সগীর। তাঁর কাব্য ইউসুফ-জুলেখা সুলতান গিয়াসুদ্দীন আজম শাহের রাজত্বকালে (১৩৮৯-১৪১০) রচিত বলে মনে করা হয়। এর সব পুথি চট্টগ্রাম ও ত্রিপুরা (বর্তমান কুমিল্লা ও পার্শবর্তী ভারতীয় ত্রিপুরা) থেকে পাওয়া গেছে। বাইবেল-কুরআনের ইউসুফ নবীর সংক্ষিপ্ত কাহিনী যা ফেরদৌস ও জামীর ইউসুফ-জুলেখায় পল্লবিত, তিনি তা বাংলায় যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তাতে তা একটি মৌলিক কাব্যের মর্যাদা পেয়েছে। জৈনুদ্দীন একটিমাত্র কাব্য রসুলবিজয় রচনা করে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি গৌড় সুলতান ইউসুফ শাহের (১৪৭৪-৮১) সভাকবি ছিলেন। এর গল্পাংশ ফারসি থেকে নেওয়া। ‘বিজয়’ জাতীয় যে কাব্যধারা মধ্যযুগে প্রাধান্য লাভ করে তদনুসারেই এর নামের সঙ্গে ‘বিজয়’ শব্দটি যুক্ত হয়। কাহিনীতে কিছু ঐতিহাসিক নামের উল্লেখ থাকলেও ঘটনা ঐতিহাসিক নয়। মুজাম্মিল ১৫শ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে বর্তমান ছিলেন। তিনি প্রধানত তিনটি কাব্যের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন: নীতিশাস্ত্রবার্তা, সায়াৎনামা ও খঞ্জনচরিত। আরবির অনুবাদ সায়াৎনামায় সুফিবাদ স্থান পেয়েছে এবং অনুবাদে স্বাচ্ছন্দ্যের কারণে কাব্যটি আকর্ষণীয় হয়েছে। তাঁর নীতিশাস্ত্রবার্তায় বহু বিষয় লিপিবদ্ধ হয়েছে। চাঁদ কাজী ছিলেন গৌড় সুলতান হুসেন শাহের (১৪৯৩-১৫১৯) নবদ্বীপের কাজী। তিনি এ পদে থাকাকালেই নবদ্বীপে গৌড়ীয় বৈষ্ণবমতের প্রচার ও প্রসার ঘটে এবং তিনি নানা কারণে বৈষ্ণব-ইতিহাসে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। তিনি কোনো কাব্য রচনা করেননি, তবে বৈষ্ণব পদ রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন। শেখ কবীরও ছিলেন একজন খ্যাতিমান পদকর্তা। তিনি সুলতান নাসিরুদ্দীন নসরৎ শাহের সময়ে আবির্ভূত হন এবং সম্ভবত তাঁর রাজকর্মচারী ছিলেন। আফজাল আলী এযুগের কবিদের অন্যতম। নসিহৎনামা নামে একটি কাব্য এবং বৈষ্ণবীয় ঢঙে রচিত তাঁর কয়েকটি পদ পাওয়া গেছে (সম্ভবত ১৬৬২ খ্রিস্টাব্দের দিকে রচিত)। এ গ্রন্থে কবিত্ব তেমন নেই, তবে সরল ভাষায় ধর্মোপদেশ আছে। সাবিরিদ খান বেশ কয়েকটি গ্রন্থের রচয়িতা বলে মনে করা হলেও কোনোটিরই সম্পূর্ণ অংশ পাওয়া যায়নি। বিদ্যাসুন্দর, রসুলবিজয় এবং হানিফা ও কয়রাপরী নামে তাঁর তিনটি কাব্যের খন্ডিত পুথি পাওয়া গেছে। দোনাগাজীর বিখ্যাত কাব্য সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল। তিনি সম্ভবত ১৬শ শতকের মধ্যভাগে আবির্ভূত হন। তাঁর ভাষা সাধারণ এবং প্রাকৃত-প্রভাব ও সারল্যের মিশ্রণে প্রাচীনত্বের দ্যোতক। শেখ ফয়জুল্লাহ মধ্যযুগের মুসলিম কবিদের মধ্যে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন। যে পাঁচটি গ্রন্থের জন্য তিনি খ্যাতিমান সেগুলি: গোরক্ষবিজয়, গাজীবিজয়, সত্যপীর (১৫৭৫), জয়নবের চৌতিশা এবং রাগনামা। রাগনামাকে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম সঙ্গীতবিষয়ক কাব্য মনে করা হয়। দৌলত
Suraiya Soha
מחק תגובה
האם אתה בטוח שברצונך למחוק את התגובה הזו?