ইংরেজ সিভিলিয়ানদের ভারতীয় ভাষা ও বিভিন্ন বিষয়াদি শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ। এখান থেকেই ধারাবাহিকভাবে বাংলা গদ্য রচনা ও চর্চার সূত্রপাত হয়। ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলা গদ্যের ক্ষেত্রে এই কলেজের অবদান ইতিহাস খ্যাত। শেষ দিকে বিদ্যাসাগরের মতো ব্যক্তিত্ব এখানে বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ ছিলেন।
বাংলা গদ্যচর্চায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন উইলিয়ম কেরী (১৭৬১-১৮৩৪) নামে একজন ইংরেজ কর্মকর্তা। তিনি বাংলা গদ্যচর্চাকে ধর্মপ্রচারের অনুরূপ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে গ্রহণ করেন। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর মিশন থেকে বাইবেলের বঙ্গানুবাদ মথী রচিত মঙ্গল সমাচার প্রকাশের মধ্য দিয়ে তাঁর যাত্রা শুরু হয়। পরে তিনি ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে গিয়ে গদ্যে পাঠ্যপুস্তক রচনা ও প্রকাশের কাজ আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর নেতৃত্বে একদল বাঙালি পন্ডিত বাংলা পাঠ্যপুস্তক রচনা ও বাংলা ভাষা শিক্ষার কাজ শুরু করেন। এভাবে কেরী এবং ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের প্রচেষ্টায় বাংলা ভাষার একটা পরিকল্পিত ধারার প্রবর্তন ঘটে। কলেজের বাংলা বিভাগের পন্ডিত রামরাম বসু (১৭৫৭-১৮১৩) ও মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার (১৭৬২-১৮১৯) সর্বপ্রথম বাংলায় যথাক্রমে ফারসি ও সংস্কৃত শব্দ ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্য কেরীর অবদানই বেশি। বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধনে কেরী যে অবদান রাখেন, তার জন্য তিনি বঙ্গদেশ ও বাংলা ভাষার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
Suraiya Soha
حذف نظر
آیا مطمئن هستید که می خواهید این نظر را حذف کنید؟