মধুসূদন মেঘনাদবধ রচনার কিছুকাল পরে ইউরোপ চলে যান এবং প্রবাসে বসে সনেট লিখতে শুরু করেন, যা চতুর্দ্দশপদী কবিতাবলী নামে ১৮৬৬ সালে প্রকাশিত হয়। কিছু গীতিকবিতা ও কিশোরতোষ নীতিমূলক কবিতাও তিনি রচনা করেন। অমিত্রাক্ষর ছন্দ ও সনেটের মতো বাংলা সাহিত্যে প্রথম বিয়োগান্ত নাটক রচনার কৃতিত্বও মধুসূদনের। বস্ত্তত মধুসূদনের দ্বারাই বাংলা কাব্যে আধুনিকতার সূত্রপাত হয় এবং বাংলা সাহিত্য বিশ্বসাহিত্যের মর্যাদা লাভ করে।
মধুসূদনের পরে বাংলা কাব্যের ইতিহাসে উল্লিলখিত হন হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৯০৩) ও নবীনচন্দ্র সেন (১৮৪৭-১৯০৯)। হেমচন্দ্রের শ্রেষ্ঠ কীর্তি মহাভারতের কাহিনী অবলম্বনে রচিত সুবৃহৎ মহাকাব্য বৃত্রসংহার (১৮৭৫)। এতে সাধনার জয় ও স্বাজাত্যবোধ তুলে ধরা হয়েছে। উনিশ শতকের হিন্দুধর্মীয় বিশ্বাস ও আচারনিষ্ঠাকে কবি পূর্ণ মর্যাদা দেন এবং কাব্যের বিভিন্ন আঙ্গিক নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। নবীনচন্দ্র আখ্যানকাব্য, খন্ডকবিতা এবং মহাকাব্য রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি মধুসূদনের দ্বারা প্রভাবিত হলেও তাঁর রচনাভঙ্গি ততটা অনুসরণ করেননি। কাব্যক্ষেত্রে তাঁর খ্যাতি প্রধানত দুটি কারণে জাতীয়তাবাদের পোষণ ও সনাতন ধর্মবিশ্বাস। তাঁর প্রধান কাব্যগ্রন্থ পলাশীর যুদ্ধ (১৮৭৫) প্রকাশে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ হয়।
Suraiya Soha
Удалить комментарий
Вы уверены, что хотите удалить этот комментарий?