হাজার বছর ধরে
"হাজার বছর ধরে" কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান রচিত একটি সামাজিক উপন্যাস। উপন্যাসের প্রেক্ষাপট গড়ে উঠেছে গ্রামীণ জীবনকে কেন্দ্র করে। বাড়ির কয়েকটি ঘর, পরিবার ও মানুষদের জীবনের প্রেম-ভালোবাসা, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার জীবনের গল্পই হাজার বছর ধরে উপন্যাসের মূল উপজীব্য। বৃদ্ধ মকবুলের চতুর্দশী বউ টুনি খেলার সাথী হিসেবে পায় পিতৃ-মাতৃহীন অনাথ মন্তুকে। চায় খোলা আকাশের নিচে খেলে বেড়াতে, ভেসে বেড়াতে। তাই সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয় অল্প বয়সী সুঠামদেহী মন্তুকে। টুনি আর মন্তু সকলের অগোচরে রাতের বেলায় বেরিয়ে পড়ে মাছ ধরতে। বর্ষায় যায় শাপলা তুলতে।
এমনি করে দুজন দুজনার কাছে এসে যায়। অব্যক্ত ভালবাসার জোয়ারে ভাসে ওরা দু'জন। কিন্ত কেউ মুখ ফুটে বলতে পারেনা মনের কথা, লোক লজ্জার ভয়ে। সেই সুরই ব্যক্ত হয় মন্তুর কণ্ঠে-
"আশা ছিল মনে মনে
প্রেম করবো তোমার সনে"
কিন্তু সমাজের রক্ত চক্ষু ওদের দূরে রাখে। এক সময় টুনির স্বামী বৃদ্ধ মকবুল আকস্মিকভাবে মারা যায় এবং কলেরার আক্রমণে গাঁয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ বদলে যায়। কিছুদিন পর মন্তু টুনিকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেও সে আর তা গ্রহণ করতে পারে না। ইতোমধ্যে তার পরিচয়ে এসে গেছে বিধবা নামে। গ্রামীণ নানা বাধাবিপত্তি আর কুসংস্কারই যেন হাজার বছর ধরে টুনি আর মন্তুর ভালবাসাকে অপূর্ণ করে রাখছে। এই গল্প যেন গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরের, প্রতিটি মানুষের।
Suraiya Soha
Deletar comentário
Deletar comentário ?