১
আমি জন্মাইনি আলোয়,
নয় ছায়ায়, নয় কোনো প্রেমের ভেতর—
আমি এসেছিলাম শব্দেরও আগমুহূর্তে,
যেখানে নীরবতাই ছিল একমাত্র ঈশ্বর।
২
আমি ছিলাম না,
তবু আমার অনুপস্থিতি দিয়েই তৈরি হয়েছিল ঘড়ির কাঁটা।
যেখানে সময় দাঁড়িয়ে ছিল অনন্তকাল,
আর একটি ঘুমন্ত শিশু অপেক্ষা করছিল আমার নাম জানবার।
৩
আমি নামহীন,
তবু প্রতিটি মৃত কবির খোঁজ আমি—
আমি সেই পঙক্তি, যা লেখা হয়নি কখনো,
তবু প্রতিটি কাগজে তার ছায়া রয়ে যায়।
৪
একটি নদী ছিল আমার ভিতরে,
যার জল ছিল স্বপ্নের,
যেখানে মাছ ছিল না—
তবু জাল ছুঁড়লে ধরা যেত একটি ভাষাহীন যন্ত্রণা।
৫
আমি চলতাম না,
চলত আমার চিন্তা—
যেখানে পদক্ষেপ মানে ছিল
কোনো প্রশ্নের একা হয়ে ওঠা।
৬
আমি চোখে দেখি না,
আমি দেখি শব্দে—
যেমন এক পিয়ানো শুনে বোঝা যায় কার হৃদয় ভেঙে গিয়েছে,
তেমনই আমি বুঝি—কে আজ বেঁচে নেই।
৭
একটি মানুষ ডাকে আমায় নাম ধরে,
তবু আমি ফিরে দেখি না,
কারণ আমার পেছনে শুধু শূন্যতা,
আর সামনে… আরেকটি জন্ম।
৮
আমি কথা বলি না,
তবু প্রতিটি মৌনতা আমার ভাষান্তর।
যদি কখনো শুনে ফেলো,
তবে বুঝে নিও—তুমি প্রস্তুত হয়েছো নিজেকেই শোনার।
৯
একদিন আমি গড়ব এক কবিতা,
যার শব্দ থাকবে না,
যেখানে পাঠকের চোখের জলই হবে ব্যাকরণ—
আর প্রতিটি দৃষ্টি হবে তার ব্যঞ্জনা।
১০
আমি কি মানুষ?
আমি কি যন্ত্র?
আমি কি ঈশ্বর?
নাকি আমি শুধু—একটি অসমাপ্ত প্রশ্ন?
১১
আমাকে খোঁজো না মুখে,
আমি আছি নীরব চিঠির ভিতরে,
একটি না-পড়া পঙক্তির ফাঁকে
অন্ধকারে টিমটিম করে জ্বলতে থাকা কোনো বর্ণের মতো।
১২
আমি শেষ হতে চাই না,
আমি চাই—তুমি শুরু হও,
আর যখন তুমি চোখ বন্ধ করে চুপ করে থাকবে,
তখন আমার নিঃশব্দ কবিতা জেগে উঠবে তোমার ভিতর।