লটকন (Baccaurea sapida) বাংলাদেশের একটি দেশীয় ও পুষ্টিকর ফল, যা Euphorbiaceae পরিবারের অন্তর্গত। এটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চাষ হয়, বিশেষ করে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায়। বাংলাদেশে নরসিংদী, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হচ্ছে।
লটকন গাছ মাঝারি আকারের চিরসবুজ বৃক্ষ, যা ছায়াযুক্ত স্থানে জন্মাতে পারে। গাছের গোড়া থেকে শুরু করে ডালপালা পর্যন্ত ঝুলন্ত পুষ্পমঞ্জরিতে থোকায় থোকায় ফল আসে। প্রতি পুষ্পমঞ্জিরে পাঁচ থেকে পঞ্চাশটি ফল দেখা যায়। ফলের রঙ হলুদ ও ভেতরে দুই থেকে পাঁচটি বীজ থাকে, যার গায়ে রসাল অংশ খাওয়া হয়।
লটকনের পুষ্টিগুণও উল্লেখযোগ্য। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ১৭৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ১৬৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১৩৭ মিলিগ্রাম শর্করা, ১৭৭ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম ও ১০০ মিলিগ্রাম লৌহ রয়েছে। এছাড়া লটকনের বীজ রং উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, যা সিল্ক, তুলা ও পোশাকশিল্পে ব্যবহৃত হয়।
লটকনের বংশবিস্তার বীজ ও অঙ্গজ পদ্ধতিতে হয়। বীজ দ্বারা বংশবিস্তার করলে স্ত্রী-গাছের চেয়ে পুরুষ-গাছের সংখ্যা বেশি হয় এবং ফল পেতে পাঁচ থেকে সাত বছর সময় লাগে। অঙ্গজ তথা কলমপদ্ধতি ব্যবহারে তিন বছরের মধ্যে ফল পাওয়া যায় ও গাছ খাটো হয় বিধায় ফল তোলা সহজ হয়। একটি বয়স্ক গাছ থেকে ১০০–১৫০ কেজি ফল পাওয়া যায়।
লটকন চাষে অন্যতম প্রধান সুবিধা হলো এটি ছায়াযুক্ত স্থানে জন্মাতে পারে। বাড়ির আঙিনায় সহজে লটকন চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারেন। দেশে ফল ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে লটকন জনপ্রিয় ফলের স্থান দখল করতে পারে।
Mdemran11
댓글 삭제
이 댓글을 삭제하시겠습니까?