"চিঠির নিচে আগুন"
কলকাতা শহরের এক পুরনো বাড়িতে একা থাকে মৃণালিনী সেন। তার বয়স হয়েছে অনেক—৭২ বছর। চারপাশে পুরনো বই, রেকর্ড প্লেয়ার, কিছু শুকনো গোলাপ আর একটা কাঠের বাক্স—যেটা সে ৫০ বছর ধরে কখনো খোলেনি।
মৃণালিনী এক সময় বিখ্যাত লেখিকা ছিলেন, নাম করেছিলো ‘বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহিনী’ হিসেবে। কিন্তু হঠাৎ করে একদিন সবকিছু ছেড়ে দেয়—লেখা, প্রকাশনা, মানুষ, শহর। কারো সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখেনি।
তার বাড়িতে একটা কিশোর ছেলেকে মাঝেমধ্যে দেখা যায়—নাম রাহুল, যে কলেজের পড়াশোনার ফাঁকে মাঝে মাঝে এসে বৃদ্ধার ওষুধ এনে দেয়, গল্প করে। মৃণালিনী তার সঙ্গে ধীরে ধীরে একটা সম্পর্ক গড়ে তোলে, যেমনটা এক সময় মা-ছেলের হতো। কিন্তু রাহুল জানে না, এই চুপচাপ বয়স্ক নারী নিজের মধ্যে কী আগুন পুষে রেখেছে।
একদিন, হঠাৎ মৃণালিনী রাহুলকে ডাকে। তাকে বলে:
“তুই কি জানিস, আমি কাউকে মারতে চেয়েছিলাম?”
রাহুল হেসে বলে, “আপনি? আপনি তো চিঠি লেখেন। গুলি না।”
মৃণালিনী বলে, “চিঠির নিচেই আগুন থাকে, যদি মনটা পোড়ে। আজ তুই একটা বাক্স খুলবি আমার জন্য।”
রাহুল কৌতূহলী হয়ে খুলে ফেলে সেই ৫০ বছরের পুরনো কাঠের বাক্স। তার মধ্যে আছে শত শত চিঠি, কারও নাম লেখা নেই, শুধু তারিখ আর কিছু বাক্য—