যখন আমি জুন মাসে ছুটিতে গেলুম, আমার যাবতীয় পার্থিব সম্পত্তি জড়ো করলুম এক জায়গায়, মধুর পলায়নের জন্যে উদ্বেল হয়ে উঠলুম, সেই ছোটখাটো সব জিনিসের দিকে যাবার জন্যে উন্মুখ জীবনকে যা দেয় সুন্দর ঝলমলে কোনো অর্থ, আমি দেখতে পেলুম গাজা আছে যেমনকে তেমন, আগের মতোই, যেমন তাকে চিরকাল জানি, একটা জং-ধরা শামুকের খোলা দিয়ে আটকানো ভেতরমুখো গুঁজে বসে থাকা একটা কিছু, ঢেউ যে-শামুককে ছুড়ে ফেলেছে কসাইখানার পাশে আঠালো বেলেমাটির তীরে। ভয়াবহ কোনো দুঃস্বপ্নের আগটায় কারু মন যেমন গুটিয়ে যায় গাজা তার চেয়েও কুঁচকানো। তার সব সরুগলি, তাদের বিশেষ বিশেষ সব গন্ধ, পরাজয়ের গন্ধ, অভাব-অনটনের গন্ধ, পেটফোলা অলিন্দ সমেত তার সব ঘিঞ্জি ঘরবাড়ি… এই গাজা। কিন্তু কী সেই অস্পষ্ট আবছায়া যা কোনো লোককে তার পরিবারের কাছে, যেমনভাবে কোনো ঝরনার জল টেনে নিয়ে আসে পাহাড়ি ছাগলদের? মুস্তাফা, আমি জানি না। আমি শুধু জানি- আমি আম্মার কাছে গিয়েছি, আমাদের বাড়িতে, সেদিন সকালবেলায়। আমি যখন গিয়ে পৌঁছেছি, আমার ভাবি, আমার মরহুম ভাইজানের স্ত্রী, আমার সঙ্গে দেখা করল, আর ফুঁপিয়ে বলল তার মেয়ে নাদিয়া জখম হয়ে গাজার হাসপাতালে আছে, আমাকে দেখতে চায়, আমি কি তাকে দেখতে যাব সেদিন সন্ধ্যেবেলায়? তোর মনে আছে নাদিয়াকে, তের বছর বয়েস, আমার দাদার মেয়ে, রূপ তার ফেটে পড়ত?