সে তার হাত বাড়িয়ে দিল, আঙুল দিয়ে তুলে ধরল গায়ের সাদা ঢাকা। আঙুল তুলে দেখাল তার পা, উরুর কাছ থেকে কেটে বাদ দেয়া।
দোস্ত, মুস্তাফা… আমি কোনোদিন নাদিয়ার পা-দুটো ভুলব না- উরুর কাছ থেকে কাটা। না! কোনোদিনও ভুলব না যে কোন শোক তার মুখখানিকে গড়ে তুলেছে, চিরকালের মতো তার ডৌল তার ছাঁচ তৈরি করে দিয়ে গেছে। গাজার হাসপাতাল থেকে সেদিন আমি বেরিয়ে গিয়েছিলুম, নীরব-কোনো উপহাসের মতো হাতের মধ্যে মুঠো করা দুটি পাউন্ড, নাদিয়াকে দেব বলে এনেছিলুম টাকা। জ্বলজ্বলে সূর্য রাস্তা ভরিয়ে দিয়েছে টকটকে রক্তের রঙে। আর গাজা যেন হঠাৎ আনকোরা নতুন কিছু হয়ে উঠেছে, মুস্তাফা ! তুই আর আমি গাজাকে কোনোদিন এভাবে দেখিনি। শাজিয়া মহল্লার মুখটায় ডাঁই করে রাখা পাথর, মনে আছে ঐ যে রাস্তায় আমরা থাকতুম, কেন যে পাথরগুলো ওখানে এমনভাবে স্তূপ করে রাখা তার কোনো কারণ ব্যাখ্যা করবার দরকার নেই। এই গাজা, যেখানে আমরা থেকেছি, যার সৎ মানুষজনের সঙ্গে আমরা কাটিয়েছি পরাজয়ের সাত-সাতটি বছর, হঠাৎ এই গাজা কেমন যেন নতুন হয়ে উঠেছে। আমার মনে হলো এ শুধুই সূচনামাত্র। জানি না কেন, তবু আমার মনে হলো এটা যেন কোনো সূচনা। আমার মনে হলো, যে বড় রাস্তাটা ধরে আমি হেঁটে ফিরেছিলুম বাড়ি, সে যেন সাফাদের দিকে ছুটে যাওয়া দীর্ঘ, দীর্ঘ কোনো পথের আরম্ভ। এই গাজায় সবকিছু দপদপ করছে বিষাদে, মনস্তাপে, যা শুধুই কোনো রোদনের মধ্যে আবদ্ধ নয়। যুদ্ধের আহবান এই বিষাদ। তারও বেশি, এ যেন কাটা পা ফিরে পাবার জন্যে একটা প্রচণ্ড নাছোড় দাবি!