*মানসিক স্বাস্থ্য: উপেক্ষিত বাস্তবতা*

আমাদের সমাজে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা হলেও, মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব এখনো অনেকাংশে উপেক্ষিত। কেউ যদি জ্বরে ভোগে, সবাই খোঁজ নেয়। কিন্তু কেউ যদি মানসিক চাপে ভোগে, তখন তা যেন লুকিয়ে রাখার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে আমাদের চিন্তা, আচরণ, এমনকি দৈনন্দিন কাজেও প্রভাব পড়ে। আজকের দুনিয়ায় প্রতিযোগিতা, কাজের চাপ, সম্পর্কের টানাপোড়েন, সোশ্যাল মিডিয়া—সব কিছুই আমাদের মানসিক চাপে রাখে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা এই চাপকে গুরুত্ব দিই না, বরং "সব ঠিক আছে", "মানসিক রোগীদের পাগল বলা হয়"—এমন ধারণায় আটকে থাকি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি চারজনের মধ্যে একজন ব্যক্তি কোনো না কোনো সময় মানসিক সমস্যায় ভোগেন। বাংলাদেশেও এই হার উদ্বেগজনক। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে হতাশা, উদ্বেগ, একাকীত্ব ক্রমেই বাড়ছে। অথচ কাউন্সেলিং, মেডিটেশন বা মন খুলে কথা বলার সুযোগ এখনো সীমিত।

পরিবার, বন্ধু এবং সমাজ যদি মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেয়, তাহলে অনেক জীবন বাঁচানো সম্ভব। অনেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন শুধু এই কারণে যে, তারা কারো সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পারেন না। তাই দরকার সহানুভূতি, সচেতনতা এবং সঠিক সাহায্যের ব্যবস্থা।

আমরা যদি শারীরিক সুস্থতার মতো মানসিক সুস্থতাকেও গুরুত্ব দিই, তাহলে সমাজে আরও সুখী, ইতিবাচক ও উৎপাদনশীল মানুষ তৈরি হবে। আত্মবিশ্বাস, আত্মসম্মান, এবং আনন্দ—এসবই গড়ে ওঠে একটি সুস্থ মনের ভেতর দিয়ে।

আজই হোক আমাদের অঙ্গীকার: মানসিক স্বাস্থ্য লজ্জার নয়, এটি যত্নের দাবি রাখে।