#দেননি, আজ কেন এতটা কঠোর হলেন। তবে কি সে বড়ো ভুল আবদার করে বসেছে?
কিন্তু কী করবে সে? তার যে আর ফিরে যেতে ইচ্ছে করে না। মনে হয় হারিয়ে যেতে দূর থেকে দূরে। কীভাবে সে এটা বুঝাবে? পৃথিবীতে এমন অনেকেই আছে যাদের সাথে সবচেয়ে খারাপ থেকে খারাপতম ঘটনা ঘটে। কত যন্ত্রণায় কাটাতে হয় দিন। ভালোবাসা, বিশ্বাস যাদের ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। কই তারা তো ঠিক আবার দ্বিতীয় বার ভালোবাসে, দ্বিতীয় বার বিশ্বাস করে, আবারও সঙ্গীসহ বাঁচার কথা ভাবে। তবে সে কেন পারে না? আর তাছাড়া জীবনে চলতে হলে কি সঙ্গীর খুব দরকার? একাও তো জীবনটা কাটিয়ে দেওয়া যায়। উড়ে-ঘুরে, ছুটে, শখ পূরণ করে এই জীবনটাকে তো সর্বোচ্চ সুখ দেওয়াই যায়। তবে বাবা-মা কেন এতটুকু বুঝতে পারেন না! সন্তানের মায়া কাটানো সহজ নয় বলেই হয়তো তারা বেঁধে রাখতে চান সন্তানকে।
*
নিরিবিলি ঘরটাতে শো শো শব্দই শোনা যাচ্ছে কেবল। ফুল স্প্রিডে চলছে ফ্যানটা।
অবনী বেগম বিছানাটা ঝেরে একদম টান টান করে দিয়েছেন। বারান্দা থেকে সিগারেটের বিদঘুটে একটি গন্ধ ভেসে আসছে। আমজাদ সওদাগর সিগারেট ফুঁকছেন হয়তো।
বিছানা ঝেরেই তিনি বেরিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যোত হতেই আমজাদ সওদাগর বারান্দা থেকে ডেকে বললেন,
"অবনী, একটু বারান্দায় আসো।"
স্বামীর আদেশ অবনী বেগম কখনো অমর্যাদা করেননি। আজও করবেন না সেটাই স্বাভাবিক। তাই তিনি গুটব গুটি পায়ে এগিয়ে গেলেন। বারান্দায় দরজায় দাঁড়িয়ে বেশ স্বাভাবিক এবং শান্ত স্বরে বললেন,
"বলো।"
আমজাদ সওদাগরের দৃষ্টি তখনও বারান্দার গ্রিল জুড়ে। সিগারেট টানতেই ব্যস্ত তার ঠোঁট।
মিনিট দুই পেরিয়ে গেলো এহেন নীরবতায়। অবনী বেগম আবার তাড়া দিলেন,
"কী বলবে, বলো। আমার যেতে হবে।"
আমজাদ সওদাগর সিগারেটটা দূরে ছুঁড়ে মারলেন আগুন নিভিয়ে। এরপর অবনী বেগমের দিকে না তাকিয়েই বললেন,
"তুমি জানোই নিশ্চয় অহির মায়ের প্রতি আমার ভালোবাসা কতটা।"
যদিও অবনী বেগম বুঝলেন না এসময় এই কথা বলার মানে কী। তবুও জবাবে বললেন, "জানি। তারপর?"
"হুট করে অহি ওর মা'কে নিয়ে এমন বাজে মন্তব্য করাতে আমি রেগে গিয়ে ছিলাম। তার উপর তুমি এসে আটকাতে চাওয়ায় সবটুকু রাগ তোমার উপর এসে পড়ে। সেজন্য চড়টা দিয়ে দিয়েছি।"
"বুঝলাম। আর কিছু?"
চোখ বন্ধ করলেন আমজাদ সওদাগর। অবনী বেগমের গম্ভীর কণ্ঠে তার দিকে তাকালেন,
"আমি জানি তোমার খারাপ লেগেছে তাই...."
"তাই তুমি এখন সরি ফিল করছো। এটাই বলবে তো?"
আমজাদ সওদাগর বললেন, "হ্যাঁ।"
"বলার প্রয়োজন নেই।"
"প্রয়োজন নেই!" আমজাদ সওদাগরের কণ্ঠে কিছুটা অবাক ভাব।
অবনী বেগম তাচ্ছিল্য করে বললেন,
"একদমই নেই। এ জীবনে আমি যা পেয়েছি, যতটুকু পেয়েছি ততটুকু অন্যের পাওনা ছিলো। এই সংসার ছিলো অন্যের আমি সেটা পেয়েছি। তুমি অন্যের সেটা পেয়েছি। তোমার রাগও অন্য জনের জন্য সেটাও আমি পেয়েছি। আর তোমার যেই কাছে আসা কিংবা ঘনিষ্ঠতা সেটাও অন্যের জন্যই ছিলো, তা-ও আমি পেয়েছি। তুমি কখনো আমার জন্য কিছু দাওনি। কিছু রাখোনি। নেশা করে কিংবা শারীরিক চাহিদায় যখন আমার সাথে ঘনিষ্ঠ হতে তখনও তুমি তোমার প্রথম স্ত্রীর কথা ভাবতে, নাম জপতে। কী ঘৃণা লাগতো তখন আমার! অন্যের শরীর ভেবে কেউ আমার শরীরে ডুব দিচ্ছে এটা ভাবলেই মরে যেতে ইচ্ছে হতো। কিন্তু এই চার দেয়াল