আসমা আলী কথার থেকে বিদায় নিয়ে কথার রুম থেকে চলে যায়।বৃষ্টি-ও তার মায়ের সাথে চলে যেতে নেয় তখন-ই কথা বৃষ্টির হাত ধরে ফেলে।
--বৃষ্টি জানতো কথা এমন কিছু করবে।বৃষ্টি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো। কথা বৃষ্টির সামনে এসে বৃষ্টির মুখ টা আগলে নিয়ে উঁচু করলো।বৃষ্টি এবার কথার দিকে তাকাতেই কথা বৃষ্টি কে ইশারা করলো..
"কি হয়েছে তোর বৃষ্টি?আমি জানি ভর্তি পরীক্ষা টা শুধু মাত্র বাহানা এখান থেকে যাওয়ার।আসল কারন টা বল।আর তোর চোখ মুখের এই অবস্থা কেন?"
--কথা বৃষ্টি কে ইশারা করে অস্থির চোখে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে রইলো।বৃষ্টি-ও কথার দিকে কিছুক্ষণ নিষ্প্রাণ ভাবে তাকিয়ে রইলো..
--কিছুক্ষণ পর নীরবতা ভেঙে বৃষ্টি ভাঙা গলায় বলে উঠলো..
"নিজের প্রিয় মানুষ টা হারিয়ে ফেলেছি কথা।তাও আবার আমার আরেক প্রিয় মানুষের কাছে।(দীর্ঘশ্বাস ফেলে) ভালো থাকিস কথা।"
--এই বলে বৃষ্টি আর এক মুহূর্ত কথার সামনে দাঁড়ালো না। ছুটে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে।আর ঐ দিকে কথা বৃষ্টির এহন কথার কিছুই বুঝতে পারলো না।কিসের প্রিয় মানুষের কথা বলে গেলো বৃষ্টি?
_______________
--রাত ১ টা
--কথার চোখে ঘুম নেই।ঘুম আসবে কীভাবে? মনের মধ্যে এত বড় অনুতাপ নিয়ে ঘুমানো সম্ভব? কাল সে আরিয়ানের সাথে যা করেছে তার অনুতাপ তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।সে জানে না কাল তার কি হয়েছিলো।কিন্তু আরিয়ান যখন আবরার কে নিয়ে ঐ-সব কথা বলেছিলো..তখন কথা নিজেকে সামলাতে পারে নি।নিজের ভালোবাসার মানুষ কে নিয়ে কেউ মিথ্যা কথা সহ্য করতে পারে?
______
কথা এতসব ভাবছিলো ঠিক তখনই কথা গাড়ির আওয়াজ শুনতে পেলো।কথা ভ্রু কুচকালো এই ভেবে যে এই সময় বাসায় কে আসবে?আবরার তোহ আজ তাড়াতাড়ি-ই ফিরে এসেছে।সাথে করে কথার জন্য কথার পছন্দের আইসক্রিম নিয়ে এসেছিলো।কথা খুব অবাক হয়েছিলো..সে ইহজন্মেও আবরার কাছ থেকে এইসব আশা করেনি।কিন্তু পর মূহুর্তে-ই মাথা থেকে এসব ভাবনা ঝেড়ে ফেললো।তার তোহ খুশি হওয়ার কথা এই ভেবে যে আবরার যে তার এত কেয়ার করছে..তার কথা ভাবছে..কিন্তু আজ আবরারের থেকে অপ্রত্যাশিত জিনিস পেয়ে-ও কেন জানি না কথা খুশি হতে পারে নি..
____
কথা তার বারান্দা থেকে উঁকি দিয়ে নিচের দিকে তাকালো।তখন সে দেখতে পেলো আরিয়ান গাড়ি থেকে নামছে।কথা আরিয়ান কে দেখে ভীষন অবাক হয়।আরিয়ান এত রাত করে বাড়ি ফিরছে?তার মানে সারাদিন আরিয়ান বাড়ি তে ছিলো না?কথা জানে না আজ সারাদিন আরিয়ান বাসায় ছিলো কিনা।কারন সে নিজেই ঘর থেকে তেমন একটা বের হয় নি।
--কথা আরিয়ান কে দেখা মাত্র ছুটে চললো নিচে..যে করেই হোক তার আরিয়ানের কাছে ক্ষমা চাইতেই হবে।কারন সে যে বড্ড বড় অপরাধ করে ফেলেছে।
--আরিয়ানের কাছে বাড়ির আলাদা চাবি ছিলো।সে দরজার সামনে এসে যেই চাবিটা দিয়ে দরজা খুলতে যাবে ঠিক সেই মুহূর্তে তার আগেই দরজা খুলে গেছে।দরজা এভাবে খুলে যাওয়া তে আরিয়ান কিছুটা ভ্রু কুচকালো।সে মনে মনে ভাবলো..এত রাতে কে জেগে থাকবে?
--দরজা সম্পূর্ণ খুলতেই আরিয়ান সামনের দিকে তাকালো।আর তখন-ই যা দেখতে পেলো তাতে আরিয়ান স্থির হয়ে গেলো।যার থেকে পালাতে সারাটা দিন বাহিরে এখানে ওখানে কাটিয়ে আসলো.. শেষমেশ তার সামনেই তাকে পড়তে হলো?
--আরিয়ান কথা কে দেখে-ও না দেখার ভঙ্গিতে কথার পাশ কেটে চলে গেলো। কথা আরিয়ানের এমন ব্যবহারে বেশ কষ্ট পেলো।কিন্তু পর মুহূর্তেই ভাবলো..আরিয়ানের এমন ব্যবহার করা সম্পূর্ণ জায়েজ আছে।কথা এত সব ভাবনা সাইডে রেখে চলে গেলো রান্না ঘরে।কারন সে আরিয়ানের শুকনো মুখ দেখেই বুঝতে পেরেছে আরিয়ান সারাদিন কিছু খায় নি।তাই রান্নাঘর থেকে আরিয়ানের জন্য খাবার বেড়ে নিয়ে আরিয়ানের রুমের দিকে অগ্রসর হলো ..
--আরিয়ান মাত্র ফ্রেশ হয়ে তার রুমে আসলো।পড়নে তার কালো টিশার্ট ও কালো টাউজার। চুল গুলো থেকে হালকা পানি পড়ছে।মাত্র-ই শাওয়ার নিয়ে এসেছে।
--আরিয়ান রুমে আসতেই সে দেখতে পেলো তার ঘরের টি-টেবিলের উপর খাবার রাখা।আর তার পাশেই কথা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।আরিয়ান কথা কে দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।তারপর কোনো কিছু না বলেই বারান্দায় চলে গেলো ভেজা টাওয়াল টা শুকাতে দেওয়ার জন্য। টাওয়াল টা বারান্দার রশিতে ঝুলিয়ে আরিয়ান রুমে আসলো।
--রুমে এসেই আরিয়ান কোনো দিকে না তাকিয়ে সোফায় বসে পড়লো।আর টি-টেবিল থেকে খাবার টা নিয়ে বিনা শব্দে খাওয়া শুরু করলো।কথা অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে আরিয়ানের দিকে।আরিয়ানের এই নীরবতা কথা কে ভীষন পোড়াচ্ছে।হ্যা কথা আরিয়ান কে ভালোবাসে না ঠিক-ই।কিন্তু কথার জীবনে আরিয়ান অনেক কিছু।
--আরিয়ান নিঃশব্দে খাবার শেষ করে প্লেটে হাত ধুয়ে উঠে যায়।আগের ভঙ্গিতেই কথার সাথে কথা না বলে চলে যায় বারান্দায়। কথা-ও পা টিপে টিপে ধুরু ধুরু বু