#দিব আজকে ।অনেকদিন শুধু তিন জনে একসাথে বসে আড্ডা দেই না।
কিছুক্ষণ চুপ থেকে আয়াজ বলে উঠলো শিপ্রা কেন আজও বিয়ে করে নি তা নিশ্চয় জানিস শিহাব !?
শিহাব :জানি কিন্তু এখন ওসব নিয়ে আর ভাবি না ।সম্ভব না ।
দেখ রোদেলা মেয়ে মানুষ ।আমাদের সমাজব্যবস্থা তো জানিস ঘরে সৎমা থাকলে সেই সৎ মা যতই আদর করুক কোনো পরিবার সে মেয়েকে বিয়ে করাতে চায় না।
আর তাছাড়া শিপ্রা কে কেন মানুষের কথা শুনতে হবে ? ও যতই মন থেকে রোদেলা কে আদর করুক ভালবাসুক মানুষ দুটো কথা শোনাতে ছাড়বে না।
আর আমি চাইনা আমার মেয়ে ঘরে সৎ মা থাকার কারণে শ্বশুরবাড়িতে বা সমাজে অবহেলার শিকার হোক ।সেটা আমি সহ্য করতে পারবো না
রে ।তাই এসব নিয়ে আর ভাবতে চাই
না ।শিপ্রার অনুভূতি কে আমি সম্মান করি কিন্তু ওর অনুভূতিকে প্রাধান্য দেওয়া যে আমার পক্ষে এখন সম্ভব নয়।
আর তুই কি চাস ?শিপ্রা কে নিয়ে তুই কি ফিল করিস ?জানতে চাইলো আয়াজ।
শিহাব নিরব রইলো কোন প্রতি উত্তর করল না।
রোদেলার বিয়ের কথা উঠতেই আয়াজের মনে হলো রোদেলার
কথা ।আজ রোদেলা একবারও তার দিকে তাকায়নি কথা তো দূর ।এটাই তো চাইছিল আয়াজ।এজন্যই তো বিয়েতে মত দেওয়ার এই নাটক করেছে আয়াজ।
তবে কেন ওর বুক ফেটে ভেঙে যাচ্ছে ।দীর্ঘশ্বাস বের
হচ্ছে ।মনে হচ্ছে বুকে কোথাও কষ্ট হচ্ছে নিঃশ্বাস নিতে পারছে না।
লেখক নীলা রহমান
এরই মধ্যে আয়ানের সাথে বলা কথাগুলো মনে পড়ে গেল
আয়াজের ।গতকাল রাতে রোদেলার সাথে কথা কাটাকাটির পর বিক্ষিপ্ত মেজাজে যখন রুমে আসলো দেখলো আয়ান জেগে ছিল।
আয়ান বলেছিল ," রোদেলাকে আমাদের সাথে নিব
পাপা ।রোদেলা কে আমার মা বানিয়ে দাও প্লিজ পাপা। "
আয়ানের কথাগুলো শুনে আয়াজের বুকটা ধক করে উঠেছিল ।ছেলেটি এমন অনুনয় করে কখনোই কিছু চাইনি বাবার কাছে ।কিন্তু আজ রোদেলাকে চাইছে ।রোদেলা যে ওর জন্য সামাজিকভাবে বৈধ নয় ।নিষিদ্ধ রোদেলা আয়াজের জন্য ।
কিন্তু আয়ান কে তা কে বুঝাবে ?আয়ান ছোট বুঝতে নারাজ।
কোনভাবেই আয়ান কে মানাতে পারছে না আয়াজ ।আয়াজ না পেরে ছেলেকে ধমকে উঠলেন ।বললেন "এটা সম্ভব নয় । যা বোঝনা তা নিয়ে ছেলে মানুষী করোনা আয়ান।রোদেলা তো প্রায় তোমার সমবয়সী ।ও কি করে তোমার মা হয় ??
ও নিজেই তো বাচ্চা ! ও আমার থেকে ২১ বছরের ছোট বাবা ।তুমি না আমার ম্যাচিউর বাবা ।"
আয়ান: আমি কিছুই শুনতে চাই না পাপা ।রোদেলা কে আমার আম্মু করে দাও ।রোদেলাকে আমার চাই।
"ব্যাস আয়ান একটি কথাও নয় " বলে ধমকে উঠল আয়াজ।প্রমিস কর কাউকে এই বিয়ের বিষয়ে কিছুই বলবে না।
প্রমিজ মি আয়ান ? বলল আয়াজ।
আয়ান : ওকে প্রমিস পাপা।
কিন্তু দেখো রোদেলা তোমাকে কিছুতেই ছাড়বে না । ও তোমাকে ভালোবাসে । আমাকেও ভালবাসে ।ও সবার মত নয়।
আয়াজ এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল "ঘুমাও আয়ান।"
সেই রাতে আর আয়াজের চোখে ঘুম ধরা দেয় নি তাই রাত তিনটায় রোদেলার রুমে রোদেলা কে দেখতে গিয়েছিল।
বর্তমান
আচ্ছা শিহাব তুই আমাকে কতটা বিশ্বাস করিস ?বললো আয়াজ।
শিহাব : নিজের থেকেও বেশি ।এত বেশি যে আমার কিছু হয়ে গেলে আমি নিশ্চিন্তে রোদেলাকে তোর হাতে দিয়ে মরতে পারবো ।
"যদি কোন ভুল করি ?"জিজ্ঞেস করল আয়াজ।
তোর সব ভুল মাফ । বলল শিহাব।
ভুলটা যদি অনেক বড় হয়? জানতে চাইলে আয়াজ।
"তারপরেও মাফ কারণ আমি জানি এমন কোন ভুল নেই যেটা তুই ইচ্ছাকৃতভাবে করবি বা কোন খারাপ নিয়তে করবি আমি তোকে চিনি তাই" বলল শিহাব।
কি নিয়ে এত ভাবছিস ? তুই চাইলে তো আমি আমার কলিজাটা কেটে তোরে সিঙ্গারা বানিয়ে খাওয়াতে পারি। বলেই চোখ মারলো শিহাব।
আযাজ: তুই ভালো হবি না শালা। বলেই দুই বন্ধু হেসে উঠলো।
আয়াজ চুপচাপ দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
মনের গভীরে কোথায় যেন একটা অপরাধবোধ ওকে কুরে কুরে খাচ্ছে।
শিহাবের দিকে তাকিয়ে আর কোন কথা বলতে পারলো না আয়াজ । ভাবছে যাকে এত বিশ্বাস করে ভরসা করে ওর জীবনের সব থেকে মূল্যবান জিনিসটি গচ্ছিত রাখতে পারবে শিহাব সেই ব্যক্তিটি ওর সাথে সব থেকে বড় বিশ্বাসঘাতকতা করেছে । কেমন লাগবে শিহাবের ? কেমন হবে ওর প্রতিক্রিয়া যখন ও প্রথমে এই ব্যাপারটি জানবে ?
আর ভাবতে পারছে না আয়াজ।
যদিও আয়াজ নিজের ইচ্ছায় কিছু করেনি ।বিয়েটা ছিল সম্পূর্ণ কাকতালীয় এবং এক্সিডেন্টাল কিন্তু আয়াজের মনের ভিতর যা চলছে সেটা তো এক্সিডেন্টাল বা কাকতালীয় নয় ।
কেন মনের মধ্যে বারবার নিষিদ্ধ অনুভূতিগুলো উঁকি মারছে ? কেন বারবার রোদেলার চেহারা ভেসে ওঠে ওর চোখের সামনে ?সেই নিষিদ্ধ স্পর্শের কথা ভাবলে কেন বারবার শিহরিত হয় ওর দেহ মন?? ভাবতে ভা