#
"ও মা
"কিহ?"
"আহা ভাবি। বাদ দেও। এমনি মুখ ভার করে রেখেছে। এসব বললে দেখো আজ আর যাবেই না৷"
মাধবি বেগম হাসেন,
"যা মা জামা গুছিয়ে নে যা।"
হৃদি রুমে চলে যায়।
কাল এত বৃষ্টি হলো আজকে এত গরম পড়েছে।
শরীর ঘেমে অস্থির অবস্থা।
হৃদি রুমে গিয়ে দেখে সেখানে কেউ নেই।। আরহাম ঘুমিয়ে ছিল। হয়ত উঠে চলে গিয়েছে।
হৃদি তার জামা বের করে ওয়াসরুমে চলে আসে।
ফোন হাতে নিয়ে খুবই মনযোগ দিয়ে আরহাম একটা নিউজ দেখছে।
"পাবলিক এডভোকেট মি.জাহিদ শিকদার। যিনি নিউরাইস গ্রুপস এর বিপক্ষে একটি কেস লড়ছিলেন। তিনি গতকাল কার এক্সিডেন্ট এর মারা গিয়েছেন।
এখন আপাতত যারা নিজেদের ভিক্টিম দাবি করছে তাদের পক্ষে দাঁড়ানোর মত কেউ নেই৷"
আরহাম ফোনটা মুঠো করে নেয়।
কিছুটা তাচ্ছিল্য হাসল।
এমন সময় তার পাশে এসে বসে আসরাফ খান।
হাতে কফির মগ।
"কি দেখছো?"
"তেমন কিছু না৷"
"এসব নিউজ চ্যানেলরা কম্পানির বিরুদ্ধে এভাবে নিউজ বানায় যেন কম্পানির সব দোষ করছে।"
"আপনার কি মনে হয়। এর জন্য শুধুমাত্র নিউজ চ্যানেল দেরই দোষ। কম্পানির কোন ভুল নেই?"
আসরাফ খান মৃদু হাসলেন।
"এত কিছুর বিচার করতে গেলে বিচারক হতে হবে।। কিন্তু সময় এসেছে এখন তোমাকে
'ইম্পেরিয়াল খান কর্পোরেশনে ' জয়েন করতে হবে। তোমার দাদাও এটাই চায়। আমারো বয়স হচ্ছে। তোমার দাদা তুমি জয়েন হলে অবসর নিবে। আমারো কষ্ট কম হয়। "
আরহাম বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
আরহামের উত্তর দেওয়ার আগেই সেখানে আনিসুর খান উপস্থিত হন।
তিনি গলা পরিষ্কার করেন,
"খুহুম..... ভাই আমার মনে হয় আরহামের এখনো সেই দায়িত্বের জন্য সঠিক বয়স হয়নি। "
"কেন বয়স হবেনা৷ ১০ বছর ইতালিতে কেন পড়ালেখা করেছে। ফিরে এসে বাপ চাচার কোম্পানি সামলাবে। যথেষ্ট বয়স হয়েছে তার৷"
আনিসুর খানের মুখটা ধুলো ধুলো হয়ে গেছে।
আরহাম বাবাকে থামিয়ে বলে ওঠে,
"আমি বাড়িতে ফিরে অফিস জয়েন করব বাবা৷"
আরহামের কথাটা শুনে খুশি হয়ে যায় তার বাবা৷
"সত্যি? "
"হ্যাঁ। আমারো কিছু দায়িত্ব আছে তাইনা চাচু?"
আনিসুর খান জোর পূর্বক হাসলেন,
"হ্যাঁ! অবশ্যই।"
"আর হ্যা বাবা। আমার সেক্রেটারি অলরেডি দেশে পৌঁছে গেছে। আমার নতুন কোন সেক্রেটারির প্রয়োজন নেই।"
আরহাম উঠে যায় সেখান থেকে।
"ভাইয়া একটু তাড়াহুড়ো হয়ে গেল না? "
"আরহাম যথেষ্ট বোঝে। আমি জানি ওর পদার্পণ ইম্পেরিয়াল খান কর্পোরেশনের' জন্য সুখকর হবে।"
আসরাফ খান কথা গুলো বলে নিজের জায়গা থেকে উঠে যায়।
আনিসুর খান বসে নিজের ক্রোধ দমনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
"বলেছিলাম। গৃহযুদ্ধ করিস না। আমার কথা শুনলি না।"
সকালের নাস্তা শেষে শহরের যাওয়ার জন্য সবাই রেডি হয়ে গেছে।
হৃদির মনটা কেন জানিনা এবার নানুর বাড়িতে যাওয়ার দিকে টানছে না।
কিন্তু মাধবি বেগম কোন মতেই হৃদিকে রেখে যাবে না। সাথে প্রেমাও।
আজিজ মির্জা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন,
"খারাপ লাগছে?"
"না৷ এমনি। আর কিছু দিন বাড়িতে থাকলে আম গুলো খেতে পারতাম৷ ঝড় হলে কে কুড়াবে?"
আজিজ মির্জা হেসে দিলেন,
"কিছু দিনের জন্য যাচ্ছিসত মা। মামণি কত আবদার করেছে হৃদির কাছে। না মানলে মামণি কষ্ট পাবে কিনা।"
"হ্যাঁ।"
"আর তা ছাড়া সেখানে নানা ভাইও আছে।
গেলে হৃদির শুধু আদর আর আদর।"
নানার কথা শুনে হৃদি ফিক করে হেসে দেয়।
নানা সত্যি তাকে ভীষণ আদর করে।
ইহান যেতে পারছে না। ওর পরিক্ষা সামনে। তার জন্য শুধু হৃদিকেই যেতে হচ্ছে।
প্রেমা এগিয়ে আসে।
"এবার ছাড় ফুপাকে। চল দেরি হচ্ছেত। আসি ফুপা।"
"এসো মা। ভালো ভাবে যাও।"
প্রেমা হৃদিকে নিয়ে এগিয়ে আসে রাস্তায়।। বাড়ি থেকে উঠান পেরিয়ে রাস্তা।
সেখানেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।
"প্রেমা আমি তোর সঙ্গে যাব৷"
"কিভাবে? তুইও গাড়িতে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসিস আর আমিও। কিভাবে দু'জন এক সাথে যাব৷"
"আমি ওই সান্ডাহাতির গাড়িতে উঠব না৷"
"ভাইয়ার গাড়ি সবার থেকে দামি।"
হৃদির ভ্রু কুচকে যায়।
মনে মনে বলে,
"সালা দামি গাড়ির মেলা দেমাগ। সে আমাকে না নিয়ে চলে এসেছে। বলেছে আমি নাকি নোংরা হয়ে আছি। তার দামি গাড়ি নোংরা হয়ে যাবে। "
হৃদির কল্পনায় ছেদ ঘটে,
"কি হলো হৃদি।"
"হ্যাঁ সব থেকে দামি। তুই যা না৷ আমাকে কেন যেতে বলছিস৷"
"কারণ আমি ভাইয়ার সাথে যাব না।"
( সারা রাস্তা গম্ভীর হয়ে থাকবে। আমার রোড জার্নি টাই বেস্তে যাবে।)
প্রেমার পরের কথা টুকু মনে মনেই বলে।
এমন সময় গাড়ির হর্ণ শোনা গেল।
আরহাম চেপে ধরে রেখেছে হর্ণ।
প্রেমা কানে হাত দেয়,
"এ ভাইয়া প্লিজ থামাও।"
হর্ণ থামিয়ে জোরই বলে আরহাম,
"আমার সময় লস হচ্ছে। দ্রুত গাড়িতে উঠলে খুশি হই।"
"হৃদি যা বোন। নাহলে রুনা চাচির সঙ্গে যেতে হবে বুঝিস তখন।"
হৃদি কথাটা শুনে আরহামের গাড়ির দিকে দৌড় দেয়।
রুনা মামির চেয়ে আরহাম ঠের ভালো।
হৃদি এসে দাঁড়ায়।
আরহাম গাড়ির দরজা খুলে দেয়।
হৃদি ভেতরে বসে।
গাড়ির বাহির থেকে ভেতরটা আরও সুন্দর।
হৃদি এদিক ওদিক দেখে।
এমন সময় সেখানে আনান উপস্থিত হয়।
"আরহাম ভাই। আমাকেও নিয়ে চলো তোমার সঙ্গে।"
আরহাম আনান কে ইগনোর করে গাড়িটা টান দিল।
হৃদি পেছনে তাকিয়ে আছে।
"আপুকে নিয়ে আসতেন। জায়গাত আছে।"
আ