ঘরে
মাহিরের কথায় ভদ্র মেয়েট মতো হা করলো সাইরা,
তৎক্ষনাৎ কানে ভেসে উঠলো মাহিরের আত্ম চিতকার।
" ছিঃ ছিঃ এটা তুই করতে পারলি সাইরা?কিন্তু কি করে করলি? জিহ্বা তো আগের মতোই আছে, বড় তো হয়নি একটুকু ও, তাহলে কি করে করলি এমন কাজ।? না না তোকে তো এর শাস্তি পেতেই হবে।
এর কঠিন শাস্তি হওয়া চাই, ।
কঠিন শাস্তির কথা শোনতেই গলা শুখিয়ে কাঠ সাইরার। ডুক গিলে গলা ভিজানোর আপ্রান চেষ্টা চালাচ্ছে সে।
মাহির সে দিকে পাত্তা না দিয়ে হাতের দু আগুল উঁচু করে অপর হাত দ্বারা একটি আঙুলে ধরে দেখালো
" অপশন ওয়ান:- বাড়িতে সকলের সামনে আমাকে লাভ ইয়ো বলবি, আর বলছি আজ থেকে তুই তোর বরের সাথে থাকতে চাস।
মাহিরের প্রথম অপশন শোনে গলা শুখিয়ে এবার মরুভূমি হয়ে গেছে সাইরার, সাইরাকে শুখনো ডুক গিলতে দেখে মাহির বেশ আয়েশ করেই বললো,
এতো চিন্তার কিছু নেই আর একটা সহজ অপশন আছে,
অপশন টু :- ফাকা ঘরে ১০১ টা চু'মু খেতে হবে আমায়,,
পৃথিবীর অষ্টম নবম দশমতম আশ্চর্যকর বস্তু দেখার মতো অবাক হয়ে ডেবডেব তাকিয়ে আছে সাইরা,
মুখ আপনা আপনি হা হয়ে শব্দ বের হলো,
" কিহহ, আমি তোমাকে, চু,,,চু,,,
সাইরাকে কষ্ট করে বাকি কথা শেষ করতে হলো না আর। তার আগেই মাহির বলে দিলো
" চু'মু খাবি,,,
তুই আমাকে চুমু খাবি, আমার এই ঠোঁটে,
হাতের তর্জনী আঙুল ধারা ঠোঁট ছুয়ে দেখিয়ে বললো।
তার সে কথায় সাইরা গলা ফাটিয়ে বললো,
" নাাাাাাাাাাাাাাহহহহহহহহহহহহহহ,,
।
।
রাত ৩ টা বাজে ঘুম থেকে এরকম চিতকার করে উঠতেই পাশে থাকা হিয়া আপু ঘুম ঘুম গলায় বললো,
" এতো রাতে কি হলো রে সারু, দুঃস্বপ্ন দেখলি নাকি.কিসের না? ?
হিয়া আপুর গলা শোনতেই পাশে থাকা হিয়া আপুর দিকে ডেবডেব করে তাকালো সাইরা। বুঝার চেষ্টা করলো এতোক্ষণ কি হয়েছে,
তার মানে এতোক্ষণ স্বপ্ন দেখছিল সে।
যাক বাবা বাচা গেলো, তা নয়তো ঐ ভদলোকটাকে ১০১ টা চুমু খেতে হতো তাকে, ছিঃ ছিঃ ভাবতেই কেমন লজ্জা লাগে তার।
সাইরা কে এ ভাবে ঠাই বসে থাকতে দেখে হিয়া তার হাতে হালকা টান দিয়ে শুইয়ে দিয়ে বললো,
" ঘুমাতো সারু।
সাইরা ও আয়েশে চোখ বন্ধ করে নিলো সকালে আবার উঠতে হবে। কাল তার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু। না মানে কলেজ জীবন আরকি, আর কলেজে নতুনদের নাকি রেগ দেয়, এসব নিয়ে সারা দিন ভাবার কারনেই রাতে এসব আবোল তাবোল স্বপ্ন দেখা হয়তো। কিন্তু তার মাঝে আবার এই মাহওর আসলো কেন তাই বুঝলো না সে।
_____=____________
সকালে ভোরের আলো ফুটার আগেই ঘুম ভেঙে গেছে সাইরার।যে মেয়েকে বেলা ৮-৯টায় ডেকে ও ঘুম থেকে তোলা যায় না। সে মেয়েটা এতো সকাল সকাল উঠে বসে আছে। এতে অবাক সকলে, কলেজ জীবন নিয়ে সকলেরই শখ থাকে, তবে সাইরা যা করছে তা রীতিমতো পা'গলা'মি বলা চলে।
একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য ও মানুষ এতো এতো প্ল্যান করে না, যা কিনা সে কলেজের প্রথম দিন কি ভাবে যাবে তা নিয়ে প্ল্যান করে রেখেছে।
শুধু কি তাই? কলেজে যাবে বলে ফুফুকে ও দাওয়াত করা হয়েছে তাদের বাড়িতে,,,
সাইরার বাবারা তিন ভাই এক বোন। সাইরার আব্বু মাঝারো, বড় চাচার দুই ছেলে এক মেয়ে, আর সাইরা একাই তার বাবা মায়ের সন্তান। ছোট চাচার অবশ্য দুইটা ছেলে আছে তবে তাদোর কখনো দেখা হয়নি নিজ চোখে। না দেখার কারন সে এক লম্বা কাহিনি,।
।
লাল শাড়ি, লাল চুরি সাথে ঠোঁটে লাল টকটকে লিপস্টিক আর চোখে গাঢ় কাজল লাগিয়ে সকালের নাস্তার টেবিলে বসে আছে সাইরা।
বাড়ির একেক সদস্য তাকে একেক ভাবে দেখছে। কেউ আড় চোখে তাকাচ্ছে তো কেউ হা করে তাকিয়ে আছে । কেউ দেখে মুচকি হাসছে আবার কেউ মনে মনে পা'গ'ল বলছে তাকে।
রান্নাঘর থেকে আরিফা খানুন পরোটার প্লেট হাতে আসতে আসতে বললো,
" এ ভাবে কেউ সাজে সাইরা। এটা কলেজ কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান না। মানুষ কি বলবে,?
মায়ের কথায় মুখ বাকালো সে,
" আমি দেখেছি আম্মু কলেজের ফাস্ট দিন সবাই অনেক সেজেগুজে যায়, তুমি আমায় বকবে না একদম ।
বলেই দাদুর দিকে তাকালো অভিমানী মুখ নিয়ে। যার অর্থ, মাকে যেন বকে দেয় দাদু।
তাই করলো বৃদ্ধ মহিলা,
" বউমা তুমি তোমার কাজ করো, একদম বকবে না আমার নাতনিকে। যাও বলছি।
দাদুর কথায় বিশ্বজয়ের হাসি হাসলো সাইরা।
তার সাথে হাসলে সকলেই।
অল্প খবার শেষ করে আবার চলে গেলো রুমে, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আরও আধঘন্টা সময় নিয়ে নিজেকে ঠিক করলো, এ দিকে নিচে থেকে বড় চাচ্চু তোফজ্জল হোসেন তাড়া দিচ্ছে জলদি করার জন্য।
অবশেষে নিচে নামলো সাইরা। গাড়ি করে তাকে কলেজ গ্রেটে নামিয়ে নিজের অফিসে চলে গেলো।
কলেজে নতুন সে, ভর্তির সময় এসেছিল একবার। তা আবার আম্মুর আর হিয়া আপুর সাথে, এতোক্ষণ সাইরার মুখটা হাসিখুশি থাকলেও এখন চুপসে গেছে। নতুন কলেজে নিজেকে একা এতিম এতিম লাগছে তার৷ চুসানো মুখ নিয়ে গুটি গুটি পায়ে সামনে এগুচ্ছে সে, মনে তার হাজারো সংশ্রয়,
কলেজের নতুনদের নাকি রেগ দেওয়া হয়, তার মধ্যে সব থেকে প্রচলিত জনপ্রিয় রেগ হচ্ছে কলেজে সকলের সামনে সিনিয়র কাউকে প্রপোজ করা। আর সে সব ভাবনা থেকেই কাল রাতে ঐ সব স্বপ্ন ও দেখেছে সাইরা। কিন্তু না কেউ তো ডাকছে না তাকে,
তাহলে কি সব স্বপ্ন বৃথা যাবে?
মনে মনে দোয়া,করছে, কেউ তো ডাক একবার কেউ তো ডাক,
ঠিক তখনি পিছন থেকে কেউ ডেকে উঠলো,
" এইযে রক্তজবা,,,,দাড়াও
পুরুষ নালী কন্ঠ কানে আসতেই পা জোড়া থেমে গেলো সাইরার। বুকে হাত দিয়ে মনে মনে বললো,
" আমায় ডাকছে?
চলবে
হৃদয়ে_প্রণয়_ছোঁয়া
পর্ব-১
নুসরাত_পুতুল
Mitu Dewan Mitu
মন্তব্য মুছুন
আপনি কি এই মন্তব্যটি মুছে ফেলার বিষয়ে নিশ্চিত?