#নি। তাই ওর সম্পর্কে আইডিয়া নেই বললেই চলে।”
“ফুপ্পিতো নেই, এখন আইডিয়া হয়েই বা কি লাভ?”
রোকেয়া মির্জার মুখ মলিন হয়ে এলো। কথা বললেন না তিনি। কেবল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। ইয়াশ এবং ইয়াদ বুঝতে পারল তাদের দাদী জানের মন খারাপ হয়ে গেছে। তাই দুই ভাই রুকেয়া মির্জার দুই গা'ল দু দিকে টে'নে বলল,
“দাদী জান আমরা আছি না? মন খারাপ করছ কেন?”
“সবকিছু হারানোর পরতো, তোমরাই আমার শেষ সম্বল দাদুভাই। তোমাদের জন্যই তো আমি বেঁচে আছি। নয়তো সেই কবেই পরপারে পাড়ি জমাতাম।”
ইয়াদ প্রসঙ্গে এড়াতে বলল,
“আমরাতো যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন, তোমার কি মত দাদী জান?”
“অবশ্যই যাবে তোমরা। আমার নাতীরা লু'কি'য়ে থাকবে কেন? তোমাদের ওই শিক্ষাতো আমি কখনো দিইনি।”
হাসলো ইয়াদ আর ইয়াশ।
[৩৩]
“এত কা'প'ড় নিচ্ছ কেন? আমরা ২ দিনের জন্য যাচ্ছি সানশাইন, সারাজীবনের জন্য নয়।”
মেঘ জবাব দিলো না। নিজের মতো করে ট্রলি গুছিয়ে রাখছে সে। ইয়াদ পরখ করে বলল,
“আমার কাপড় কোথায়? তোমাদের বাসায় গিয়ে কি খা'লি গায়ে থাকব? অবশ্য তোমার সামনে থাকতেই পারি। সবার সামনেতো আর পারা যাবে না।”
মেঘ শুকনো ঢো’ক গি'লে বলল,
“এত ল'জ্জা'হী'ন মানুষ কিভাবে যে হয়! আল্লাহ মালুম।”
“তুমিইতো মু'খে আনছ। কাপড় কোথায় আমার?”
“আপনার ড্রেস নিয়েছি আমি। অন্য ট্রলিতে।”
ইয়াদ সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল,
“কেন কেন? অন্য ট্রলিতে কেন?”
“এমনিই। আমার সাথে আপনার ড্রেস আমি নিব না।”
ইয়াদ দুই কাঁধ উঁচু করে বলল,
“ওকে ফাইন, যাওয়া ক্যান্সেল।”
“না, না আমারটাতেই নিচ্ছি।”
মেঘ দ্রুত হাতে এক ট্রলি থেকে অন্য ট্রলিতে ইয়াদের কাপড় নিয়ে রাখে। ইয়াদ এক গা’ল হেসে বলল,
“দুইটা দে'হে'র একটা আ'ত্মা। আর, দুজনের কাপড় একসাথে নিতে পারছ না?”
[৩৪]
“শাড়ি পরেছ কেন রৌদ্র?”
রৌদ্রানী চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে বলল,
“আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই।”
ইয়াশ স্যুট পরতে পরতে ভাব নিয়ে বলল,
“ওহ হো…. আমাকে দেখানোর জন্য? আই লাইক ইট রৌদ্র। অনেক সুন্দর লাগছে তোমায়। একদম আমার শহরের রৌদ্রানীর মতো।”
রৌদ্রানী ঠোঁ'টে লি'প'স্টি'ক দিলো। তারপর শাড়ির কুঁচি ঠিক করতে করতে বলল,
“আমি কারোর মন জয় করার জন্য নিজেকে সাজাইনি। আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই সেজেছি। কপালের দো'ষে হলেও বিয়েটা আমার হয়েছে। মানুষ দেখে বলবে, “ খান বাড়ির মেয়ের এই হাল কেন? শ্বশুরবাড়ির মানুষ কি খেতে দেয় না?” এই কথাটা শুনতে আমি অনিচ্ছুক। আই হোপ… মাইন্ড ইট?”
ইয়াশ কাছে গেল রৌদ্রানীর৷ খো'লা পে'টে হা'ত রেখে জ'ড়ি'য়ে ধরল রৌদ্রানীকে। তারপর বলল,
“ভালোবেসে, কাছে ডেকে, বুঝালেওতো পারো রৌদ্র।”
“দে'হ'ই পেয়েছ ইয়াশ। মন কখনো পাবে না।”
কথাটা ইয়াশের হ'জ'ম হয়নি। সে খা'ম'চে ধরে রৌদ্রানীর পে'টে। ফিসফিস করে বলে,
“ভালোবেসে, আ'দ'র করে বুঝালাম বুঝোনি। যা বুঝেছ তাই-ই। দে'হ'ই লাগবে আমার। মনের দরকার নেই। মনের মৃ’ত্যু সেই কবেই হয়েছে। যেইদিন আমায় ছেড়ে চলে গিয়েছিলে তুমি।”
[৩৫]
“ভাবী, রান্না করবে না? এই প্রথম বিয়ের পর ওরা আমাদের বাড়ি আসবে। না খাইয়ে রাখবে নাকি?”
জোহরা বেগম সোফায় বসেই জবাব দিলেন,
“আমি রান্না করতে চাই না। না খাইয়ে অ'প'মা'ন করব।”
“ভাবী, এইটা খুব খা'রা'প হয়ে যায় কিন্তু…”
“হোক খা'রা'প।”
তখনি সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামে ফারুক খান। বললেন,
“রান্না করুন ভাবী।”
“ফারুক….”
“হ্যাঁ, রান্না করুন। জু'তা মে'রে গরু দান না হয় নাই-ই করলাম। আগে গরু দান, ওরে জুতা মা'র'ব।”
জোহরা বেগম অবাক হয়ে বলল,
“সত্যি সত্যি!”
হাসলো ফারুক খান। বলল,
“কথার কথা বললাম ভাবী।”
জোহরা বেগম জা নিয়ে রান্নাঘরে ঢু'ক'লে'ন। ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়েছে যদিও। কারণ, তিনি বুঝতে পারছেন, ফারুক অবশ্যই কিছু না কিছু ভেবে কথাটা বলেছে। ফারুক খান ফোনটা হাতে নেয়। তারপর কল দেয় মেঘকে। ওপাশ থেকে কল রিসিভ হলো না।
[৩৬]
“তোমাদের পাতে খাবার তুলে দেওয়ার ইচ্ছে আমার ছিল না। নেহাৎই আমার দেবর বলেছে তাই রেঁধেছি।”
ইয়াশ আর ইয়াদ, ফ্রেশ হয়ে যেই-ই টেবিলে খেতে বসেছে তখনি জোহরা বেগম কথাটি বলে উঠলেন। ইয়াদ বলার আগেই ইয়াশ জবাব দিলো,
“তা আপনার সেই ভালো দেবর কোথায় মা? না মানে, আসার পর থেকে আমরাতো উনাকে ভুলেও দেখিনি।”
“কিছু মানুষের সাথে গিয়ে দেখা করতে হয়।”
ইয়াদ বলল,
“ওকে, ওকে মা। আমরাই দেখতে যাব। অবাক’কর বিষয় হলো, বাড়িতে নব জামাই এলো, উনি দেখতে এলো না। ভাতিজিদের জন্য মায়া নেই নাকি?”
জোহরা বেগম অবাক হলেন। দুই ভাইয়ের ত'র্কে দেখে। রৌদ্রানী আর মেঘ চুপচাপ খাচ্ছে। কথার মধ্যে কথা বললো না আর। ইয়াদ আবারও বলে উঠল,
“আর, আমাদের পাতে আপনি খাবার না দিলে আমরা না খেয়ে থাকতাম মনে হয় আপনার? তা মা, মির্জা বাড়ির মানুষ খান বাড়ির থেকে কম কিসে? টাকা দিয়ে বাঘের চোখও নাকি কেনা যায়। আর, এইটাতো খাবার। ফুড পাণ্ডা আছে না? ঠিকই অর্ডার করে দিতাম।”
“তোমাদের দাদী জান কি এইসবই শিখিয়েছে?”
“একদম নয় মা। আমাদের দাদী জান কেবল, কোন সময়ে কোন কথা বলতে হয় তা শিখিয়েছে।”
ইয়াশ, ইয়াদ আর বসলো না। খাবারে পা'নি ঢে'লে