গল্পের নাম: শেষ চাবির খোঁজে
১. অপরিচিত ডাক
রাত্রি তখন সাড়ে দশটা। বিশাখা বসে ছিল নিজের ছোট্ট দোতলা বাড়ির বারান্দায়, হাতে চায়ের কাপ। হঠাৎই মোবাইলটা বেজে উঠল। স্ক্রিনে কোনো নাম নেই, শুধু লেখা — “নামহীন”।
“হ্যালো?” বিশাখা বলল।
একজন ভাঙা, কর্কশ কণ্ঠ: “তুমি বিশাখা সেন? তোমার বাবার পুরনো কেসের শেষ চাবি তোমার কাছে। রাত বারোটার মধ্যে চাবিটা খুঁজে না পেলে… সময় ফুরিয়ে যাবে।”
বিশাখা চমকে উঠল। তার বাবা, সুবীর সেন, একজন প্রাক্তন পুলিশ অফিসার ছিলেন। বছরখানেক আগে হৃদরোগে মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি জীবনের শেষদিকে অনেকটা সময় কাটিয়েছিলেন একটা কেস নিয়ে, যা তিনি কাউকে বলতেন না।
কিন্তু ‘শেষ চাবি’? কিসের?
বিশাখা সাথে সাথেই উঠে গিয়ে বাবার পুরনো ঘর খুলল — সেই ঘর, যেটা বাবার মৃত্যুর পর তালা বন্ধ অবস্থায় ছিল।
২. বাবার ঘর
ঘরটা ধুলোর চাদরে ঢাকা। দেয়ালের ওপর পুরনো মানচিত্র, এক কোণে রাখা একটা ধাতব ট্রাঙ্ক। বিশাখা চাবি খুঁজে বের করে ট্রাঙ্ক খুলল। ভেতরে বাবার ডায়েরি, কিছু পুরনো ফাইল, আর একটা ছোট্ট কাঠের বাক্স।
ডায়েরি খুলে সে পড়তে লাগল:
“কেস নম্বর 741/পূর্ব — ধৃত ব্যক্তি: দেবাশীষ মল্লিক। খুন করেছে তার স্ত্রীকে, কিন্তু প্রমাণ নেই। চাবি কোথায় সে বলছে না। আমি খুঁজে পাব। একটা বাক্স আছে। যার তিনটা চাবি — দুটি সে রেখেছে, শেষটা আমার হাতে।”
“তাহলে… আমি কি সেই শেষ চাবি পেয়েছি?” বিশাখা ভাবল।
কিন্তু কাঠের বাক্সটা খুলতে গেলে দেখা গেল — তাতে তিনটি চাবির জায়গা, একটি ফাঁকা। বাবার ডায়েরির নিচে আর একটি কাগজ পাওয়া গেল, যাতে লেখা:
“যদি আমি না থাকি, খুঁজো সেই ঘড়ি যেখানে সময় থেমে গেছে।”
৩. থেমে থাকা সময়
বিশাখা জানে, তার বাবার প্রিয় ঘড়িটি ছিল বসার ঘরের পুরনো দেয়ালঘড়ি। সে ছুটে গিয়ে ঘড়ির পেছনের কাভার খুলে দেখে, ভিতরে একটা কাগজ মোড়া — এবং তার ভেতরে একটা সোনালী চাবি।
এই চাবি কি সেই “শেষ চাবি”?
ঠিক তখনই তার দরজার বাইরে একটা শব্দ হলো — কার যেন হালকা পায়ের আওয়াজ, তারপর থেমে যাওয়া।
সে ভয়ে পেছনে ফিরে তাকায়। কারো দেখা নেই। কেবল ঘরের ছায়ায় যেন কারা দাঁড়িয়ে রয়েছে… চুপচাপ।
৪. চাবির বাক্স খুলে গেল
বিশাখা তিনটি চাবি একে একে কাঠের বাক্সে লাগাল। "টিক… টিক… ক্লিক!"
বাক্স খুলল।
ভেতরে কী ছিল?
একটি ভিডিও ক্যাসেট (পুরনো VHS), একটি চিঠি, এবং একটি পেনড্রাইভ।
চিঠিতে লেখা:
“যদি তুমি এটা পড়ো, তার মানে আমি মারা গেছি। দেবাশীষ মল্লিক নির্দোষ। আমি তার স্ত্রীর খুনের আসল প্রমাণ পেয়েছিলাম — কিন্তু আমি চুপ থেকেছিলাম। আমি ভয় পেয়েছিলাম সত্য প্রকাশ করতে। এই ভিডিওতে সব আছে।”
বিশাখার চোখ ছলছল করে উঠল। “বাবা… আপনি কি সত্যিই একজন নিরপরাধকে ফাঁসিয়েছিলেন?”
সে ক্যাসেট চালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু ঘরে কোনো VCR নেই। তখন সে পেনড্রাইভটা নিজের ল্যাপটপে লাগায়।
ভিডিওটি চালু হয়।
৫. চমকপ্রদ সত্য
ভিডিওতে দেখা যায় — একজন নারী কাঁদছে। মুখে আঘাতের চিহ্ন। ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলছে:
“আমার নাম অনিন্দিতা মল্লিক। যদি আমি মারা যাই, জেনে রেখো— আমাকে খুন করেছে আমার ভাই অর্জুন। ও সম্পত্তি চায়। আমার স্বামী দেবাশীষ নির্দোষ। ও কখনো আমায় হাত তুলত না। সত্যটা যেন কেউ জানে… প্লিজ…”
ভিডিও থেমে যায়।
বিশাখার বুক ধকধক করে। সে দ্রুত অনলাইনে গিয়ে দেখে— অর্জুন মল্লিক এখনো জীবিত, এবং সে এখনো শহরের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি।
সে জানে, এই ভিডিওটা পুলিশের হাতে গেলেই অনেক কিছু বদলে যাবে।
৬. শেষ মোড়
ঠিক তখন আবার ফোনটা বাজে।
ওই একই কণ্ঠ:
“তুমি পেরেছো। এবার সেটা যেখানে থাকা উচিত, সেখানে দাও। তোমার বাবার গর্ব তুমি।”
বিশাখা জবাব দেয়নি। শুধু ফোনটা নামিয়ে রেখে ভিডিওটা পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দিল।
দু’দিন পর সংবাদে আসে বড় খবর — অর্জুন মল্লিক গ্রেফতার। ২৫ বছর আগের খুনের মামলায় নতুন প্রমাণের ভিত্তিতে কেস রি-ওপেন।
আর বিশাখা?
সে নিজের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে দেখে, পুরনো সেই দেয়ালঘড়িটা আবার চলতে শুরু করেছে।
📜 শেষ
“সত্য কখনো মরে না। সে অপেক্ষা করে… শেষ চাবির জন্য।”
আপনি চাইলে আমি এই গল্পের একটি বড় সংস্করণ তৈরি করতে পারি — ৫০০০ বা ১০,০০০ শব্দে বিস্তৃত কাহিনি, চরিত্র, জটিল মোড়, এবং আরও অনেক নাটকীয়তার সাথে।
আপনার পছন্দ হলে, আমি সেটি সিরিজ আকারে লিখে দিতে পারি। বলুন, আপনি কি চান এই গল্পের বড় রূপ?