অধ্যায় ৪: আমগাছের নিচে ফিরে দেখা
শহরে সকাল নামে ধীর গতিতে। চায়ের দোকানে ধোঁয়া ওঠে, পুরনো রেডিওতে বাজে রবীন্দ্রসঙ্গীত, আর সেই আমগাছের নিচে কাঠের বেঞ্চে বসে আছেন হরিশচন্দ্র রায়—হরিদা।
শীতের সকাল। কাঁধে চাদর। এক হাতে গরম চা, আরেক হাতে সেই চিরপরিচিত খাম। নতুন ঠিকানা লেখা নেই আজ। শুধু খালি খামটা বারবার ঘোরাচ্ছেন।
হাশেম চাচা এসে দাঁড়ালেন পাশে, “হরিদা, আর কতকাল? কখনো চিঠি আসবেই না তো?”
হরিদা মৃদু হেসে বললেন, “তুই জানিস না হাশেম, ভালোবাসা কীভাবে পথ খুঁজে ফেরে।”
ঠিক তখনই, দূরে একটা সাইকেল এসে থামল। পোস্টম্যান। সে আজ একটু থেমে তাকাল হরিদার দিকে।
— “হরিদা, আজ একটা চিঠি আছে আপনার নামে। বিদেশ থেকে।”
হরিদা থমকে গেলেন।
সাবধানে চিঠিটা হাতে নিলেন। দেখতে দেখতে আঙুল কাঁপছে। নিজের ঠিকানা, আর প্রেরকের নাম—নীলাঞ্জনা রায়।
দীর্ঘ দশ বছর পর এই নামটা দেখলেন চিঠির উপরে।
বাকি শহর তখন চুপচাপ দাঁড়িয়ে। এমন দৃশ্য তারা আগে কখনো দেখেনি।
হরিদা চিঠিটা হাতে নিয়ে চোখ বন্ধ করলেন। যেন শব্দ শুনতে পাচ্ছেন—নীলুর কণ্ঠ, শৈশবের গান, স্ত্রীর হাসি।
চোখ খুলে ফিসফিস করে বললেন, “সে লিখেছে, হাশেম। আমার মেয়ে লিখেছে!”
চিঠিটা খোলার আগে হরিদা বললেন, “আজ চা আমি খাওয়াব। কারণ আমার মেয়ে ফিরছে।”
পাশ থেকে একজন ছোট মেয়ে এসে বলল, “হরিদা, আপনি কাঁদছেন নাকি?”
তিনি হাসলেন। চোখে জল গড়িয়ে পড়ছে। বললেন—
“না মা, এটা খুশির বৃষ্টি। এ বয়সে মানুষ আবার জন্মায়, যদি কেউ ফিরে আসে।”
🎼 শেষে বাজল পিয়ানো
সেই চিঠির খবর ছড়িয়ে পড়ল শহরজুড়ে। সবাই জানল—হরিদার অপেক্ষা বৃথা যায়নি।
কয়েক সপ্তাহ পরে, শহরের রাস্তায় দেখা গেল একজন বিদেশফেরত মেয়েকে—চোখে চশমা, হাতে বাবার হাত।
তারা হাঁটছিল আমগাছের নিচে, যেখানে কাঠের বেঞ্চটা তখনও দাঁড়িয়ে। নীলু বলল—
“বাবা, চলো আজ একটা গান বাজাই। শেষবার নয়, নতুন করে শুরু করার জন্য।”
শেষ নয়, শুরু...
আপনি চাইলে আমি এই উপন্যাসের আরও চরিত্র, অতীত-বর্তমানের ফ্ল্যাশব্যাক, বা নতুন টুইস্ট (যেমন নীলুর নতুন জীবন, বা বাবার কোনও গোপন চিঠি) যোগ করে গল্পটা আরও বিস্তৃত করতে পারি। চাইলে বলুন—উপন্যাসটা ১০ অধ্যায় পর্যন্ত বড় করবো?