এক কাপ চা
রিমা এখন শহরের নামী এক কর্পোরেট অফিসে চাকরি করে। সকাল থেকে রাত, মিটিং, ক্লায়েন্ট, প্রেজেন্টেশন—জীবনটা কেমন যেন ছকে বাঁধা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে বদলেছে, পোশাক বদলেছে, হাঁটার ভঙ্গি বদলেছে, এমনকি তার কথা বলার ধরনটাও।
কিন্তু একটা জিনিস কখনও বদলায়নি—তার মায়ের মুখটা মনে পড়া, ঠিক সন্ধ্যা ছ'টার সময়। কেন ছ'টা? কারণ, গ্রামে থাকতে মায়ের হাতে বানানো এক কাপ চা ঠিক এই সময়েই রিমার জন্য থাকত তৈরি। কলেজ থেকে ফিরেই রিমা সেই চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে বসত বারান্দায়। মা পাশে বসে জিজ্ঞেস করতেন, “আজ ক্লাস কেমন হলো রে?” আর রিমা বলতে শুরু করত দিনভর কত কী ঘটেছে।
তখন মায়ের শরীর সুস্থ ছিল, ঘরজুড়ে হাসি ছিল, আর চায়ের কাপের ভেতর ছিল ভালোবাসার এক অনন্য উষ্ণতা।
আজ শহরের ব্যস্ত জীবনে, রিমার নিজের একটা এপার্টমেন্ট আছে, ডাইনিং টেবিলে দামি কেটলি আর নানা ফ্লেভারের টি-ব্যাগ। কিন্তু সেই চায়ের স্বাদ আর কখনও ফিরে আসেনি।
একদিন হঠাৎ খবর এল—মা আর নেই।
রিমা ছুটে যায় গ্রামে, মাটির সেই পুরনো বাড়িতে। সবকিছু যেন থেমে আছে ঠিক আগের মতো। বারান্দার এক কোণে একটা খালি চায়ের কাপ, তাতে হালকা ধুলোর আস্তরণ। পাশে এক চিরকুট—
“চা বানিয়ে রেখেছি রে মা, যদি একদিন হঠাৎ ফিরে আসিস।”
রিমার চোখ বেয়ে নেমে আসে অশ্রু। সে কাপটা হাতে তোলে, ঠোঁটে ছোঁয়ায়।
এ যেন শুধু এক কাপ চা নয়—এ এক জীবনের স্বাদ, যা আর কখনও পাওয়া যাবে না।
শেষ।
আপনি যদি চান, এই গল্পকে একটি দীর্ঘ উপন্যাসে রূপ দিতে পারি—রিমার জীবনের ভেতরের টানাপোড়েন, শহর-গ্রামের দ্বন্দ্ব, মা-মেয়ের সম্পর্কের অনন্য গভীরতা সব তুলে ধরা যেতে পারে।
আরও একটি গল্প শুনতে চান? বললেই শুরু করে দিচ্ছি।
Udoy Das
删除评论
您确定要删除此评论吗?
Udoy Das
删除评论
您确定要删除此评论吗?