অধ্যায় ৩: ছায়ার চোখ
আগ্রার ভোরগুলো আজকাল আর আগের মতো শান্ত নয়। বাতাসে দুঃশ্চিন্তার গন্ধ। রাজপ্রাসাদের বাইরে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে—কে হবে পরবর্তী সম্রাট?
রাজপথে অলস ঘোড়ার টগবগ আওয়াজের ভেতরেও কিছু অশান্ত কান কথা ভেসে আসে—
“শাহরিয়ার নাকি আজ শপথ নেবে…”
“খুররমকে কেউ কেউ সমর্থন করছে…”
“আসাফ খান কোথায়?”
এই কথাগুলোর অর্ধেক মিথ্যে, বাকি অর্ধেক ভয়ঙ্কর সত্য।
গুলনওয়াজ বেগম, রাজপ্রাসাদের নির্জন পূর্ব প্রান্তের বাগিচার এক চুনকাম করা ছায়াময় ঘরে, দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার সামনে পাঁচজন নারী—দাসী, গায়িকা, পুরোনো রানীর আত্মীয়, এবং একজন হারেম চিকিৎসিকা।
তারা সবাই সাধারণ চোখে ‘হারেমের অংশ’ মাত্র।
কিন্তু আজ থেকে এরা গুলনওয়াজের গুপ্তচর।
“আমাদের কেউ জানবে না কে আমরা। আমরা যুদ্ধ করব না, কিন্তু সত্যের জন্য তথ্য আনব। তুমি যাবে নূরজাহানের কক্ষে, তুমি যাবেন রাজমাতা সাবিতার কাছে, তুমি মহাফাজখানার নথি দেখবে…”
গুলনওয়াজ এক এক করে সবার চোখে তাকালেন।
তার কণ্ঠ শীতল, কিন্তু তাতে দ্বিধা নেই।
“আমরা কারও বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি না,” তিনি বললেন।
“আমরা ইতিহাসের জন্য অপেক্ষা করছি। যদি খুররম ফিরে আসে—তবে তাকে জানতে হবে কাকে বিশ্বাস করতে হবে।”
এক সপ্তাহ পরে।
এক দাসী এসে জানাল,
“বেগম, নূরজাহান আজ রাজদরবারে সভা বসাবেন। সেখানে ঘোষণা করবেন শাহরিয়ারই উত্তরাধিকারী।”
গুলনওয়াজ শান্তভাবে বললেন,
“সে অধিকার তার নেই। কিন্তু তাকে সেই ভ্রান্ত বিশ্বাসে থাকতে দিতে হবে।”
তিনি তখনই আরেক দাসীকে ডাকলেন।
“মালতী, বার্তাটি রওনা করাও। সময় শেষ হয়ে আসছে।”
সেই রাতে, রাজপ্রাসাদের উত্তর ফটকে চুপিচুপি একটি চিঠি আগ্রা ত্যাগ করে। গন্তব্য—দাক্ষিণাত্য।
চিঠিতে আবারও শুধু তিনটি শব্দ—
"তুমি একা নও।"
দূরে কোথাও, খুররম তার তাঁবুর সামনে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। তার হাতে সেই চিঠি। তিনি মৃদু হাসলেন।
“গুলনওয়াজ,” তিনি ফিসফিস করে বললেন, “তুমি এখন শুধু রানী নও। তুমি তো গোটা সাম্রাজ্যের আত্মা।”
📖 [পরবর্তী অধ্যায়: আগ্রার অন্ধকার রাত] – ষড়যন্ত্র চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে, নূরজাহান সর্বশক্তি নিয়ে প্রাসাদ দখলের পথে, আর গুলনওয়াজ প্রস্তুত তার সবচেয়ে বড় কৌশলের জন্য।
চাইলে আমি এখনই এই অধ্যায়টি লিখে দিতে পারি। আগ্রহী? ✍️