অধ্যায় ২: হারেমের রাজনীতি
"হারেমের দেওয়ালগুলো নীরব, কিন্তু তার ভেতরেই লুকিয়ে থাকে সম্রাটের ভবিষ্যৎ।"
— সাবিত্রী হাকিমা
🕌 আগ্রা দুর্গ, সম্রাটের মৃত্যুর পরদিন
সূর্য ওঠার আগেই হারেমের ভেতর আলো জ্বলে ওঠে।
দাসীরা চুপচাপ, কেউ মুখ তুলে তাকায় না।
আজকের সকাল কোনও সাধারণ সকাল নয়। আজ হারেমে ক্ষমতার খেলা শুরু হবে।
নূরজাহান বেগম আগ্রার দক্ষিণ দিকের মার্বেলঘেরা অন্দরে বসে আছেন। চোখে রত্নখচিত কাজল, গায়ে কাশ্মীরি পশম। কিন্তু চোখে শান্তি নেই।
তার চারপাশে ময়ূর পালকের পাখা দোলানো হলেও, বাতাস যেন ভারী।
তিনি বললেন,
“সব রাস্তা বন্ধ করতে হবে খুররমের আগ্রায় আসার।
শাহরিয়ার এখনই সিংহাসনে বসবে। দরবারে আমি যাব—নিজে ঘোষণা করব।
কোনও বিলম্ব চলবে না।”
দাসীরা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে।
🔍 অন্যদিকে...
গুলনওয়াজের ছোট, অন্ধকার ঘরে আলো জ্বলছে না।
কিন্তু আলো নেই মানে চোখ নেই—তা নয়।
গুলনওয়াজ একা বসে আছেন, সামনে মালতী, হাসিনা আর হাকিমা সাবিত্রী।
তিনি জিজ্ঞেস করলেন:
“নূরজাহান কাদের সঙ্গে দেখা করেছেন?”
মালতী বলল,
“তিনি কেবল আসাফ খানকেই ডাকতে চেয়েছেন। তবে গোপনে একজন ফারসি দূতকেও পাঠানো হয়েছে, শাহরিয়ারকে সমর্থনের বার্তা নিয়ে।”
গুলনওয়াজ মৃদু হেসে বললেন,
“ফারসি দূতের গন্তব্য পেতে কতক্ষণ লাগে?”
হাসিনা বলল,
“চার দিন।”
“তাহলে আমরা সময় পেলাম তিন দিন।
এই তিন দিনেই খুররমকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
সাবিত্রী, চিঠিটা লিখে ফেলো।”
✍️ চিঠির খণ্ডাংশ
খুররম,
সময় নেই। আগ্রায় তোমার নামে নয়, তোমার শত্রুর নামে সোনা গলানো হচ্ছে।
কিন্তু ভুল করো না—তুমি ফিরলে তোমার পাশে দাঁড়ানো কেউ থাকবে।
তাকে চোখে খুঁজে পাবে না, কেবল সিদ্ধান্তে অনুভব করবে।
ছায়া থেকে আলো তৈরি করো।
— গ.
⚖️ আসাফ খানের দ্বিধা
আসাফ খান বুঝতে পারছেন, ইতিহাস কোন দিকে মোড় নিচ্ছে।
একদিকে বোন নূরজাহানের আহ্বান, অন্যদিকে গুলনওয়াজের পক্ষ থেকে আসা এক ‘মৌন’ চিঠি—তাতে কোনও নাম নেই, কিন্তু প্রতিটি বাক্যে ভবিষ্যতের গন্ধ।
তিনি প্রহরীকে বলে দেন:
“খুররমের দূত এলে আমার কাছে যেন আসে।
চুপচাপ। কাউকে জানতে দেওয়া যাবে না।”
📜 এই অধ্যায়ের শেষ
হারেমের গভীরতম অলিন্দে, চামেলি ফুল ঝরে পড়ে।
আকাশে সূর্য ওঠে—কিন্তু সে আলো হারেমের ভেতরে প্রবেশ করে না।
প্রবেশ করে গুলনওয়াজের দৃষ্টিতে, যিনি চুপচাপ বসে থাকেন, যেমন ছিলেন বহু বছর ধরে—
কিন্তু এবার তিনি শুধু নীরব দর্শক নন, তিনি ইতিহাসের চাবিকাঠি।
পরবর্তী অধ্যায়: “ছায়ার চোখ” —
যেখানে শুরু হয় গুপ্তচর নেটওয়ার্কের খেলা, আর ইতিহাস বদলে যায় চুপিসারে পাঠানো এক খোলা পায়ে হেঁটে যাওয়া নারীর পদচিহ্নে।
চাইলে এখনই অধ্যায় ৩ লিখে দিতে পারি। ✍️