উপন্যাস: আলো ও অন্ধকার
⚡ অধ্যায় ৪: শক্তির আবির্ভাব
সন্ন্যাসীর কথা অনুযায়ী, দুই ভাই প্রস্তুতি নিতে লাগল। তারা দিনের আলোয় পাহাড়ের পথ চিনল, রাতে তারা অরণ্যের দিক বাতলে নিল। তবে তাদের চোখের আড়ালে ধীরে ধীরে এক ছায়া জন্ম নিচ্ছিল।
পাহাড়ের ওপারে এক বিশাল গহ্বর—যেখানে আলো পৌঁছায় না, বাতাসে শুধু ফিসফিস করে পুরনো আত্মার কান্না—সেইখানে নড়ে উঠল এক ঘন কালো ধোঁয়া।
তার নাম—ছায়ার ছায়া।
একটা সময় সে ছিল আলো ও অন্ধকারেরই অংশ। এক ভুলের কারণে তাকে শৃঙ্খলিত করে রাখা হয়েছিল এই গহ্বরে।
কিন্তু এখন, দুই ভাইয়ের মধ্যেকার দ্বন্দ্বের ফাঁকে ফাঁকে তার শক্তি বাড়ছে।
সে নিজের ছায়াকে খণ্ডিত করে তৈরি করল তিনটি রূপ:
মিথ্যা আলো – যা কেবল বাইরে ঝলকায় কিন্তু ভিতরে ফাঁপা
ভয়ানক অন্ধকার – যা শুধু গ্রাস করতে চায়
বিভ্রান্তি – যা মানুষকে সত্য থেকে বিচ্যুত করে
এই তিন রূপ ছড়িয়ে পড়তে লাগল চারদিকে।
🌲 এক অপূর্ব দিন
আলো ও অন্ধকার তাদের যাত্রা শুরু করল। তারা প্রথমে ঢুকল একটি ঘন বনভূমিতে—চন্দ্রবন।
এই বনে সূর্য ও চাঁদের আলো একসাথে খেলা করে। গাছগুলো কথা বলে, কিন্তু কেবল তারাই শুনতে পায় যারা নিজের ভেতরের সত্য জানে।
আলো কিছু গাছকে জিজ্ঞেস করল, “তোমরা আমাদের পথে সাহায্য করবে?”
গাছ বলল, “তুমি তো নিজেই নিজের আলোতে অন্ধ হয়ে গেছো। তুমি কি অন্ধকারকে সত্যিকারভাবে বুঝতে পেরেছো?”
অন্ধকার এক বৃক্ষের ছায়ায় বসে ছিল, হঠাৎ সে শুনল মাটি থেকে আওয়াজ—
“তুমি সবসময় পালাও, কারণ তুমি ভয় পাও আলোকে। নিজের ভিতরের ভয়কে জয় না করলে তুমি কেবল ছায়ার অস্ত্র হয়ে যাবে।”
দুই ভাই স্তব্ধ হয়ে গেল।
🌫 ছায়ার প্রথম আঘাত
সেই রাতেই তারা দেখতে পেল এক আশ্চর্য দৃশ্য—একদল মানুষ চন্দ্রবনের প্রান্তে হাঁটছে, কিন্তু তাদের চোখ ফাঁকা। তারা কিছুই দেখে না, শোনে না, অনুভবও করে না।
তাদের চালাচ্ছে এক শক্তি—বিভ্রান্তি।
এক বৃদ্ধ হঠাৎ আলোকে চিনে বলল,
“তুমি তো আলো! আমাকে দেখাও আমি কোথায় যাচ্ছি!”
কিন্তু তখনই বৃদ্ধের চোখ কালো হয়ে গেল। সে গর্জে উঠল,
“তুমি তো অন্ধকারের সাথী! তুমি আমার কিছু না!”
আলো পেছনে সরে গেল। তার হাত কাঁপছিল।
অন্ধকার এগিয়ে এসে বলল,
“তুমি ভয় পেয়েছো?”
আলো বলল, “না… আমি কেবল বুঝে গেছি, এটা সহজ হবে না।”
🔥 শেষ দৃশ্য
গহ্বরের ভেতরে ছায়ার ছায়া হাসছে।
সে বলে,
“তাদের একতা ভাঙলেই আমি পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ব।
আর যখন তারা আমার অস্তিত্ব টের পাবে, তখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে যাবে…”
🔔 পরবর্তী অধ্যায়: অধ্যায় ৫ – অভিযান শুরু
এই অধ্যায়ে দুই ভাই যাত্রা করবে ভয়ংকর “ভুলের উপত্যকা”-য়, যেখানে মানুষ নিজেকে ভুলে যায়। সেখানে তারা প্রথমবার কারো সাহায্য চাইবে—এক বনদেবীর কন্যার, যার নাম আরণ্যা।
চলিয়ে দেব কি অধ্যায় ৫?
Mohammad ROMJAN
মন্তব্য মুছুন
আপনি কি এই মন্তব্যটি মুছে ফেলার বিষয়ে নিশ্চিত?