গল্পের নাম: “ছায়ামানব”
রাত তখন প্রায় ২টা। ঢাকা শহরের গলি-ঘুপচিতে তখন গভীর নিস্তব্ধতা। সৌরভের বাসার জানালা দিয়ে চাঁদের আলো ঢুকছিল। হঠাৎ এক অদ্ভুত শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায়।
চোখ কচলাতে কচলাতে সে জানালার দিকে তাকিয়ে দেখে, নিচের ফাঁকা রাস্তায় কেউ একজন ধীরে ধীরে হেঁটে যাচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয়, লোকটার ছায়া নেই!
সে জানালার কাঁচ সরিয়ে স্পষ্ট দেখতে পেল—একজন লম্বা, কালো কোট পরা মানুষ, যার পায়ে জুতা নেই, কিন্তু হাঁটার শব্দ হচ্ছে টক টক করে।
“ছায়া কই?”—সৌরভ ফিসফিস করে। সে দ্রুত মোবাইল নিয়ে ক্যামেরা অন করে, কিন্তু স্ক্রিনে কিছু ধরা পড়ে না।
এই ঘটনার পরের দিন সৌরভ সারা দিন অস্থির থাকে। তার মনে হচ্ছিল, কেউ যেন তাকে ফলো করছে। অফিসে সহকর্মী তুহিনকে বলতেই সে হাসতে হাসতে বলে, “তুই হয়ত ঘুমের ঘোরে দেখছিস ভাই!”
কিন্তু পরের রাতেও সেই অদ্ভুত মানুষটা আবার দেখা দিল। এবার জানালার ঠিক নিচে দাঁড়িয়ে ছিল সে। সৌরভ নিঃশব্দে মোবাইল তুলতেই সে মাথা ঘুরিয়ে জানালার দিকে তাকাল।
চোখ দুটো ছিল গভীর, যেন সব আলো শুষে নিতে পারে।
সেই রাতেই সৌরভ সিদ্ধান্ত নেয়—এই রহস্যের সমাধান তাকে করতেই হবে।
পরদিন সে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, তার ফ্ল্যাটের নিচে যে গ্যারেজটা আছে, সেটা আগে একটা পুরনো বাড়ি ছিল। সেই বাড়িতে একসময় একজন একা বৃদ্ধ থাকত, নাম ছিল মৃণাল সাহা। ১৯৮৫ সালে এক রাতে তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। লাশটা নাকি হঠাৎ উধাও হয়ে যায়।
লোকমুখে কথিত ছিল—মৃণাল সাহা আত্মহত্যা করেননি, তাকে হত্যা করা হয়। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় মামলা এগোয়নি।
সৌরভ রাতের জন্য প্রস্তুতি নেয়। জানালার পাশে বসে থাকে মোবাইল, রেকর্ডার আর একটা ছোট ক্যামেরা নিয়ে।
রাত ২টা ১০ মিনিট। আবার সেই ছায়াবিহীন মানুষটি আসে। এবার সে জানালার দিকে তাকিয়ে সরাসরি বলে ওঠে,
“আমার নাম মৃণাল... আমার ছায়া তারা নিয়েছে... প্রমাণ খুঁজে বের করো!”
সৌরভ স্তব্ধ। প্রথমবারের মতো সেই ছায়ামানব কথা বলছে। সে মোবাইলে রেকর্ড করতে যায়, কিন্তু স্ক্রিন হ্যাং হয়ে যায়।
পরদিন সৌরভ স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে পুরনো ফাইল ঘেঁটে খুঁজে পায়—মৃণাল সাহার মৃত্যুর সময় গ্যারেজের নিচে একটি লোহার বাক্স পাওয়া গিয়েছিল, যার ভিতরে ছিল কিছু চিঠি।
সৌরভ থানায় যোগাযোগ করে এবং সেই প্রমাণ নতুন করে তুলে ধরে। কয়েক মাসের তদন্তের পর জানা যায়, সত্যিই মৃণালকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল।
আর সেই রাতের পর থেকে সৌরভ আর ছায়াবিহীন মানুষটিকে দেখেনি। #highlights2025 Google #googleuser
Mehedi hassan Parves
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?