---
বাবা – এক নিঃশব্দ ছায়া
মা ছিলেন কাছে, আঁচলে জড়ানো,
আর বাবা? তিনি দূরে দাঁড়ানো।
চোখে কম দেখা, কথায় কম বলা,
তবুও জীবন তাঁর দানেই গড়া।
মনে আছে সেই ছোট্ট ছেলেবেলা,
স্কুলে যাবো বলে কান্নার ঢেলা।
মা দিত খেতে, চুল আঁচড়াতো,
আর বাবা? চুপচাপ সাইকেল চালাতো।
তাঁর হাতের তালু ফাটত ঠান্ডায়,
তবু কখনো বলতেন না—"আমি ক্লান্ত ভাই"।
বাজার থেকে ফিরতেন গোপনে,
নিজের জন্য কিছু না, শুধু আমাদের চাহিদায়।
ঈদের সকালে সবার নতুন জামা,
বাবা পরতেন পুরোনো পাঞ্জাবি—
চুপচাপ, হাসিমুখে।
আমরা বুঝিনি, তখনো বুঝিনি সেই ত্যাগের রুপ।
একদিন চাকরি গেল হঠাৎ,
মা বললো—“বাজেট কষি শক্তভাবে”।
বাবা শুধু বললেন, “চিন্তা কোরো না,
ছেলেটা পড়বে ঠিকই বিশ্ববিদ্যালয়ে।”
তাঁর পুরনো ঘড়ি বিক্রি হলো,
আমার ভর্তি ফিস জমা পড়লো।
আমি জানলাম না সেদিন,
বাবা কিভাবে মুখ লুকালেন সন্ধ্যায় একা বসে।
বন্ধুরা বলতো—“বাবা মানে রাগী লোক”,
আমি বলতাম—“আমার বাবা একটু চুপচাপ,
কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ ছায়া”।
আজ আমি শহরে থাকি,
বাবা গ্রামে, আগের মতোই চুপচাপ।
মোবাইলে বলেন—"খুব ভালো আছি",
তবু আমি জানি, তাঁর গলা কাঁপে মাঝে মাঝে।
একদিন ফিরব, ভাবি মনে মনে,
বাবার হাত ধরে বলবো—
"আপনার মতো হতে পারিনি বাবা,
তবে চেষ্টা করছি, আপনার ছায়া হতেই।"
---
Siam Mahamud
Deletar comentário
Deletar comentário ?