এই পৃথিবীকে আবাদ করার জন্যই আল্লাহপাক যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রসূল প্রেরণ করেছেন। সকল নবী-রসূলের দায়িত্ব ছিল আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠিত করা। তাঁর বাণী, ‘দীন কায়েম করো এবং এ ব্যাপারে মতপার্থক্য সৃষ্টি করো না’- সূরা শুরা ১৩। শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.) অন্যদের থেকে ব্যতিক্রম ছিলেন না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহপাকের বাণী, ‘তিনি আপন রসূলকে হেদায়াত ও সত্য- সঠিক জীবনব্যবস্থা (দীনে হক) দিয়ে পাঠিয়েছেন যাতে সকল জীবনব্যবস্থার ওপর একে বিজয়ী করে দিতে পারেন, মুশরিকদের কাছে তা যতই অসহনীয় হোক’- সূরা সফ ৯। নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর উত্তরাধিকার দেশের আলেম সমাজ ও ইসলামপন্থী জনগোষ্ঠীর কাজও অনুরূপ অর্থাৎ সকল দীন ও জীবনব্যস্থার ওপরে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করা। দীন কায়েম হওয়ার অর্থ হলো সমাজে আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন কায়েম করা। ইসলামকে যারা সীমাবদ্ধ অর্থে ধর্ম হিসেবে মানে তারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই বলে থাকে যে, ওরা ধর্মের নামে রাজনীতি করে এবং এভাবে সরলমনা লোকদের ধোঁকা দেয়। সরলমনা লোকগুলো না বুঝলেও একটু জ্ঞানবান যারা তারা ভালোভাবেই বুঝে যে রাজনীতির অঙ্গনে ওরা ধোঁকাবাজ এক একজন ইসলামের শত্রু এবং সুযোগ পেলেই ইসলামপন্থী ও ন্যায়বানদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। ওদের নেই নীতিবোধ, ওদের মুরব্বী পার্শ্ববর্তী দেশ ও পাশ্চাত্যের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রসমূহ। ধর্মনিরপেক্ষ জাতিসমূহের সততা, বিশ্বস্ততা ও আমনতদারিতা স্রেফ পলিসি। তারা বিশ্বাস করে যে ‘সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’ (Honesty is the best Policy.) এসব গুণাবলীর বিনিময়ে আল্লাহপাক তাদেরকে দুনিয়ায় নেতৃত্ব দান করেছেন কিন্তু আখেরাতে তাদের কোনো বিনিময় নেই। তাদের দেশে ভোট চুরি নেই, গুম- খুন নেই, রাষ্ট্রীয় তহবিলতসরুপের ঘটনা নেই। ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য লাগাতার ধর্মঘট নেই বা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গুম-খুন, আয়নাঘর ও বিচারিক হত্যাকাণ্ড নেই। কিন্তু তাদের একটি কুৎসিত চরিত্র রয়েছে। পররাজ্য দখল এবং তাদেরকে শত্রু বিবেচনা করে নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ মানবতার ধ্বংস সাধনে তারা একটুও বিচলিত নন। তাদের লক্ষ্য দুনিয়া, আখিরাত তাদের কাছে গুরুত্বের দাবি রাখে না। কিন্তু তাদের বিপরীতে আমাদের সততা স্রেফ পলিসি নয়; এর পেছনে রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষা।