👻 একগাছা: হাট কালু পাড়ার ভয়াল বটগাছ
হাট কালু পাড়া গ্রামে এক পুরনো বটগাছ আছে—গ্রামের লোক তাকে ডাকে “একগাছা” নামে। কাহিনি অনেক পুরোনো, কিন্তু ভয়টা আজও টাটকা।
বলে, অনেক বছর আগে এক বিধবা মেয়ে—মরিয়ম, এই গাছের নিচেই গলায় দড়ি দেয়। তার আত্মা শান্তি পায়নি। তারপর থেকে একগাছা বদনামি হয়ে উঠে। সন্ধ্যার পর কেউ গাছটার ধারেকাছেও যায় না।
একবার শহর থেকে এক ছেলে—রাকিব, এসেছিল মামার বাড়িতে। সে এসব কুসংস্কারে বিশ্বাস করতো না। সাহস দেখাতে গিয়ে এক সন্ধ্যায় সোজা চলে গেল একগাছার নিচে। বন্ধুদের বললো—“রাতটা আমি এখানে কাটাবো।”
রাত গভীর হতে না হতেই শুরু হলো কান্নার আওয়াজ। যেন কোনো নারী বুক চাপড়ে কাঁদছে। হঠাৎ গাছের ডাল ঝাঁকুনি দিয়ে নিজে নিজেই নাড়তে লাগল। বাতাস নেই, তবু পাতাগুলো যেন ছিঁড়ে যাবে এমন কাঁপন।
রাকিব ভয় পেয়ে উঠতে গেলে দেখল, পায়ের নিচে ঠান্ডা কিছু—চোখ মেলতেই দেখে, মরিয়ম দাঁড়িয়ে, গলায় দড়ি প্যাঁচানো, চোখ জোড়া রক্তবর্ণ। সে গর্জে উঠলো, “আমার জায়গায় কেন?”
রাকিব আর কিছু মনে করতে পারেনি। সকালে লোকজন একগাছার নিচে অচেতন অবস্থায় পেয়েছিল তাকে। এরপর সে আর কথা বলেনি। শুধু মাঝে মাঝে চিৎকার করে উঠে—“গাছটা দয়া করে কেটো না... ও রাগ করে...”
আজও গাছটা দাঁড়িয়ে, বিশাল এক অভিশাপ নিয়ে। কেউ কাটতে চায় না। শোনা যায়, যারাই কাটতে যায়—রাতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে, কেউ কেউ আর জেগে ওঠে না।
একগাছা এখন শুধু একটা গাছ না—গ্রামের লোকের ভয়, অভিশাপ আর কান্নার নাম।