হরিতলা মন্দিরের ভয়াল ছায়া
হাট কালু পাড়া থেকে আধ কিলোমিটার দূরে আছে এক পুরনো মন্দির — “হরিতলা মন্দির”। আগে এখানে লোকজন পূজা দিতে আসত, মেলার আয়োজন হতো। এখন সেখানে ঘাস আর জঙ্গল ছাড়া কিছুই নেই।
লোকের মুখে শোনা যায়, এক সময় এই মন্দিরে এক তান্ত্রিক সাধক তপস্যা করতেন। কিন্তু তার তপস্যা পূর্ণ হওয়ার আগেই, গ্রামের কিছু লোভী লোক তাকে মেরে ফেলে, কারণ তারা ভেবেছিল সাধক গোপনে সোনা লুকিয়ে রেখেছে।
মৃত্যুর আগে সাধক বলেছিলেন, “যে এ মন্দিরে রাতে পা রাখবে, সে ফিরবে না নিজের পায়ে।”
এরপর থেকে কেউ আর সন্ধ্যার পর মন্দিরে যায় না। তবে বছর তিনেক আগে গ্রামের মজিদ, ভোলা আর সেন্টু বাজি ধরে এক রাতে মন্দিরে গেল। তারা হাসতে হাসতে বলল, “ভূত-টুত কিচ্ছু না, ভয় পেলে ভূত আসে!”
তারা মন্দিরে পা রাখার কিছুক্ষণের মধ্যে ঝড় উঠল। চারদিক নিস্তব্ধ। হঠাৎ ভিতর থেকে শোনা গেল তান্ত্রিক মন্ত্রের ধ্বনি—“ওঁ ক্রৌং হ্রীং কালী...”
ভোলার মুখে ফেনা উঠে গেল, সেন্টুর শরীর কাঁপতে লাগল আর মজিদ অজ্ঞান হয়ে পড়ে। যখন লোকজন সকালে গিয়ে তাদের উদ্ধার করল, ভোলার জিহ্বা বাঁকা, সেন্টুর হাত অবশ, আর মজিদ কিছুই মনে করতে পারে না—শুধু একটা কথাই বলেছিল:
“ওর চোখ ছিল আগুনের মতো লাল... সে আমাদের নিচে থেকে দেখছিল...”
আজও হরিতলা মন্দিরের সামনে দিয়ে কেউ সন্ধ্যার পর যায় না। গ্রামের লোকজন এখনো বলে, “যা ইচ্ছা করো, কিন্তু হরিতলা মন্দিরের দিকে পা রেখো না রাতের বেলা… সাধকের চোখ আজও খুঁজে ফেরে সেই তিনজনকে…”