উপন্যাসের নাম: “পলাশফুলের দিন”
পরিচিতি:
এই গল্পটি শুরু হয় এক নিস্তরঙ্গ গ্রামে, যেখানে জীবনের ছন্দ বড় সহজ, অথচ তার মধ্যেই জড়িয়ে থাকে এক নিঃশব্দ আবেগ, টুকরো প্রেম, সমাজের বাঁধা, আর অবশেষে পরিণতি।
মূল চরিত্র – আদৃতা ও নির্ঝর।
---
প্রথম পর্ব: আগমন
পলাশপুর — নামটার মধ্যেই যেন রঙ মিশে আছে। গ্রীষ্ম এলে পলাশগাছে আগুন জ্বলে ওঠে। সেই পলাশপুরে বহু বছর পর ফিরে এলো নির্ঝর — কলকাতার ছেলেটা, যার দাদু এখানকার জমিদার ছিলেন। এখন জমিদারি নেই, শুধু ভগ্নপ্রায় বাড়িটা পড়ে আছে।
নির্ঝর এসেছে শহরের কোলাহল থেকে দূরে কিছুদিন থাকতে।
তাঁকে দেখে প্রথম যেই মুগ্ধ হলো, সে আদৃতা — গ্রামের স্কুলের শিক্ষিকা, সাহসী ও আত্মসম্মানবোধে পূর্ণ। পিতৃহীন এই মেয়েটি মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে বড় সংগ্রামের মধ্যে বড় হয়েছে।
প্রথম দেখা হল নির্ঝর আর আদৃতার — পুকুরঘাটে। একদিন নির্ঝর দেখতে পেল, আদৃতা কয়েকটা মেয়েকে বাংলা পড়াচ্ছে। নির্ঝরের মনে কেমন একটা আলোড়ন বয়ে গেল।
---
দ্বিতীয় পর্ব: টান
গ্রামের একটা অনুষ্ঠান — পলাশ উৎসব। নির্ঝর সেই উৎসবে অংশ নেয়। সেখানে আদৃতা তাকে দেখে একটু অবাক, একটু সংকোচেও পড়ে।
ধীরে ধীরে নির্ঝর আর আদৃতার মধ্যে কথাবার্তা বাড়ে। একদিন নির্ঝর আদৃতাকে বলে,
"তোমার চোখের মধ্যে একটা অদ্ভুত রকমের আত্মবিশ্বাস আছে, জানো?"
আদৃতা হেসে বলে, "এই চোখেই অনেক কিছু দেখতে হয়েছে।"
প্রেমের বীজ পড়ে যায় — নিঃশব্দে, নিভৃতে।
---
তৃতীয় পর্ব: বাধা
গ্রামে কানাঘুষো শুরু হয় — শহরের ছেলের সঙ্গে গ্রামের মেয়ের ঘনিষ্ঠতা।
আদৃতার মা খুব চিন্তিত।
"ওরা আমাদের মতো নয়, মা। ওরা এলে যায়, মন দিয়ে যায়, ফিরে যায়।"
অন্যদিকে নির্ঝরের মায়ের ফোন আসে —
"তুমি কি সত্যি গ্রামের মেয়েকে বিয়ে করার কথা ভাবছো? সমাজ কী বলবে?"
নির্ঝর দ্বিধায় পড়ে যায়। সে ভালবাসে আদৃতাকে, কিন্তু পরিবার-সমাজ তাকে টানছে অন্যদিকে।
---
চতুর্থ পর্ব: বিচ্ছেদ
নির্ঝর কলকাতায় ফিরে যায়। বলে যায় না কিছুই, শুধু রেখে যায় একটি চিঠি।
> “আদৃতা,
এই সমাজের কাছে আমি এখনও বন্দি। কিন্তু তোমাকে ভুলবো না কখনও।
– নির্ঝর”
আদৃতা চুপচাপ। চোখে জল আসে না। সে নিজেকে আরও শক্ত করে তোলে। স্কুলে পড়ানো চালিয়ে যায়, ছোট ভাইকে শহরে ভর্তি করায়।
---
পঞ্চম ও শেষ পর্ব: প্রত্যাবর্তন
চার বছর পর আবার ফিরে আসে নির্ঝর — বদলে গেছে সে। মায়ের ইচ্ছায় অন্যত্র বিয়ে করেনি। নিজের জীবন গুছিয়ে নিয়েছে, এখন নিজস্ব প্রকাশনা সংস্থা চালায়।
আদৃতা তখন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। গ্রামের নারী উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করছে।
নির্ঝর সরাসরি যায় তার কাছে।
"এই চার বছরে অনেককিছু শিখেছি, আদৃতা। এখন আমি কারও কাছে জবাবদিহি করি না। যদি তুমি চাও, আমি আবার তোমার পাশে থাকতে চাই — সব বাধা অতিক্রম করে।"
আদৃতা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে। তারপর বলে,
"এই বার, ভালোবাসলে আর হারিয়ে যেও না।"
---
সমাপ্তি:
পলাশফুলের মতো তাদের প্রেম — আগুনের মতো, ঝলমলে, আবার শীতলতার মধ্যেও এক রঙিন উত্তাপ।
গ্রামের মানুষ এই প্রথম বার দেখে প্রেম শুধু কল্পনার জিনিস নয়, সে জীবন গড়ে তোলে — ধীরে, কিন্তু দৃঢ়ভাবে।
Md Joynal abedin
Tanggalin ang Komento
Sigurado ka bang gusto mong tanggalin ang komentong ito?
RB Siyam
Tanggalin ang Komento
Sigurado ka bang gusto mong tanggalin ang komentong ito?