8 ث ·ترجم

এখানে হজরত মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সংক্ষিপ্ত ও সুন্দর কাহিনি বাংলায় তুলে ধরছি:


---

হজরত মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জীবনী

জন্ম ও শৈশব:

হজরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল আবদুল্লাহ এবং মাতার নাম আমিনা। তিনি জন্মের আগেই তাঁর পিতা ইন্তেকাল করেন। ছয় বছর বয়সে মা আমিনাও ইন্তেকাল করেন। এরপর দাদু আবদুল মুত্তালিব এবং পরে চাচা আবু তালিব তাঁকে লালন-পালন করেন।

যুবক বয়স ও সততা:

তিনি ছোটবেলা থেকেই সত্যবাদী, বিশ্বস্ত ও চরিত্রবান ছিলেন। তাঁকে "আল-আমিন" (বিশ্বস্ত) নামে ডাকা হতো। ব্যবসার জন্য তিনি সিরিয়া গিয়েছিলেন এবং তাঁর সততা দেখে ধনী ব্যবসায়িনী খাদিজা (রা.) তাঁর প্রতি মুগ্ধ হন। পরে খাদিজা (রা.)-কে তিনি বিবাহ করেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ২৫ এবং খাদিজা (রা.) ছিলেন ৪০ বছর বয়সী।

নবুয়ত লাভ:

৪০ বছর বয়সে (৬১০ খ্রিষ্টাব্দে) তিনি হেরা গুহায় ধ্যান করার সময় আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ওহি বা অহী নাযিল হয়। জিবরাইল (আঃ) এসে বলেন:
"ইকরা" — অর্থাৎ "পড়ো"।
এইভাবে তিনি আল্লাহর রাসুল (দূত) হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন।

দাওয়াত ও কষ্ট:

তিনি মক্কার মানুষকে এক আল্লাহর পথে ডাকতে শুরু করেন। কিন্তু অধিকাংশ লোক তাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়। তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের ওপর নানা নির্যাতন করা হয়। অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করলেও, বেশিরভাগ মানুষ তখনও অন্ধকারে ছিল।

হিজরত:

৭ম নবুয়তের বছরে মুসলমানরা মদিনার (তখন যত্রা নাম ছিল ইয়াসরিব) লোকদের আহ্বানে সেখানে হিজরত করেন। এই হিজরত ছিল ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

মদিনায় ইসলামি রাষ্ট্র:

মদিনায় গিয়ে তিনি ইসলামি সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে মুসলমান, ইহুদি, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের লোক একসঙ্গে বসবাস করতেন। তিনি তাদের মধ্যে চুক্তি ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন।

যুদ্ধ ও বিজয়:

মক্কার কুরাইশরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে একাধিক যুদ্ধ করে (বদর, উহুদ, খন্দক)। শেষ পর্যন্ত ৮ হিজরিতে হজরত মুহাম্মদ (সা.) কোনো রক্তপাত ছাড়াই মক্কা বিজয় করেন এবং সমস্ত প্রতিপক্ষকে ক্ষমা করে দেন।

বিদায় হজ:

১০ হিজরিতে তিনি বিদায় হজ করেন। সেখানে তিনি লাখো সাহাবিদের সামনে একটি বিখ্যাত খুতবা প্রদান করেন — যাতে মানবতা, নারীর অধিকার, একত্ববাদ, এবং মুসলিম ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেন।

মৃত্যু:

১১ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে, তিনি ইন্তেকাল করেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৬৩ বছর।


---

তাঁর চরিত্রের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক:

সত্যবাদিতা: জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সত্য ও ন্যায়কে অগ্রাধিকার দিতেন।

ক্ষমাশীলতা: শত্রুকেও ক্ষমা করে দিতেন।

মানবতা: গরিব-দুঃখী, এতিম, দাস — সবার পাশে দাঁড়াতেন।

নারী অধিকার: নারীর সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন।

শান্তি: সর্বদা শান্তির পথে আহ্বান করতেন।



---

বাবুদের তাল-পুকুরে
হাবুদের ডাল-কুকুরে
সে কি বাস করলে তাড়া,
বলি থাম একটু দাড়া।

পুকুরের ঐ কাছে না
লিচুর এক গাছ আছে না
হোথা না আস্তে গিয়ে
য়্যাব্বড় কাস্তে নিয়ে
গাছে গো যেই চড়েছি
ছোট এক ডাল ধরেছি,

ও বাবা মড়াত করে
পড়েছি সরাত জোরে।
পড়বি পড় মালীর ঘাড়েই,
সে ছিল গাছের আড়েই।
ব্যাটা ভাই বড় নচ্ছার,
ধুমাধুম গোটা দুচ্চার
দিলে খুব কিল ও ঘুষি
একদম জোরসে ঠুসি।

আমিও বাগিয়ে থাপড়
দে হাওয়া চাপিয়ে কাপড়
লাফিয়ে ডিঙনু দেয়াল,
দেখি এক ভিটরে শেয়াল!
ও বাবা শেয়াল কোথা
ভেলোটা দাড়িয়ে হোথা
দেখে যেই আঁতকে ওঠা
কুকুরও জাড়লে ছোটা!
আমি কই কম্ম কাবার
কুকুরেই করবে সাবাড়!

‘বাবা গো মা গো’ বলে
পাঁচিলের ফোঁকল গলে
ঢুকি গিয়ে বোসদের ঘরে,
যেন প্রাণ আসলো ধড়ে!

যাব ফের? কান মলি ভাই,
চুরিতে আর যদি যাই!
তবে মোর নামই মিছা!
কুকুরের চামড়া খিঁচা
সেকি ভাই যায় রে ভুলা-
মালীর ঐ পিটুনিগুলা!
কি বলিস ফের হপ্তা!
তৌবা-নাক খপ্তা…!

======

image

কে তুমি খুঁজিছ জগদীশ ভাই আকাশ পাতাল জুড়ে’
কে তুমি ফিরিছ বনে-জঙ্গলে, কে তুমি পাহাড়-চূড়ে?
হায় ঋষি দরবেশ,
বুকের মানিকে বুকে ধ’রে তুমি খোঁজ তারে দেশ-দেশ।
সৃষ্টি রয়েছে তোমা পানে চেয়ে তুমি আছ চোখ বুঁজে,
স্রষ্টারে খোঁজো-আপনারে তুমি আপনি ফিরিছ খুঁজে!
ইচ্ছা-অন্ধ! আঁখি খোলো, দেশ দর্পণে নিজ-কায়া,
দেখিবে, তোমারি সব অবয়বে প’ড়েছে তাঁহার ছায়া।
শিহরি’ উঠো না, শাস্ত্রবিদের ক’রো না ক’ বীর, ভয়-
তাহারা খোদার খোদ ‘ প্রাইভেট সেক্রেটারী’ ত নয়!
সকলের মাঝে প্রকাশ তাঁহার, সকলের মাঝে তিনি!
আমারে দেখিয়া আমার অদেখা জন্মদাতারে চিনি!
রত্ন লইয়া বেচা-কেনা করে বণিক সিন্ধু-কুলে-
রত্নাকরের খবর তা ব’লে পুছো না ওদের ভুলে’।
উহারা রত্ন-বেনে,
রত্ন চিনিয়া মনে করে ওরা রত্নাকরেও চেনে!
ডুবে নাই তা’রা অতল গভীর রত্ন-সিন্ধুতলে,
শাস্ত্র না ঘেঁটে ডুব দাও, সখা, সত্য-সিন্ধু-জলে।

image

বেলা শেষে উদাস পথিক ভাবে,
সে যেন কোন অনেক দূরে যাবে –
উদাস পথিক ভাবে।

‘ঘরে এস’ সন্ধ্যা সবায় ডাকে,
‘নয় তোরে নয়’ বলে একা তাকে;
পথের পথিক পথেই বসে থাকে,
জানে না সে কে তাহারে চাবে।
উদাস পথিক ভাবে।

বনের ছায়া গভীর ভালোবেসে
আঁধার মাথায় দিগবধূদের কেশে,
ডাকতে বুঝি শ্যামল মেঘের দেশে
শৈলমূলে শৈলবালা নাবে –
উদাস পথিক ভাবে।

বাতি আনি রাতি আনার প্রীতি,
বধূর বুকে গোপন সুখের ভীতি,
বিজন ঘরে এখন সে গায় গীতি,
একলা থাকার গানখানি সে গাবে-
উদাস পথিক ভাবে।

হঠাৎ তাহার পথের রেখা হারায়
গহন বাঁধায় আঁধার-বাঁধা কারায়,
পথ-চাওয়া তার কাঁদে তারায় তারায়
আর কি পূবের পথের দেখা পাবে
উদাস পথিক ভাবে।

======

image

দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীথে, যাত্রীরা হুশিয়ার!

দুলিতেছে তরি, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ,
ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ?
কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ।
এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।

তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান!
যুগ-যুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান।
ফেনাইয়া উঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান,
ইহাদের পথে নিতে হবে সাথে, দিতে হবে অধিকার।

অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরন
কান্ডারী! আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তি পন।
হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার

গিরি সংকট, ভীরু যাত্রীরা গুরু গরজায় বাজ,
পশ্চাৎ-পথ-যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ!
কান্ডারী! তুমি ভুলিবে কি পথ? ত্যজিবে কি পথ-মাঝ?
করে হানাহানি, তবু চলো টানি, নিয়াছ যে মহাভার!

কান্ডারী! তব সম্মুখে ঐ পলাশীর প্রান্তর,
বাঙালীর খুনে লাল হল যেথা ক্লাইভের খঞ্জর!
ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে হায়, ভারতের দিবাকর!
উদিবে সে রবি আমাদেরি খুনে রাঙিয়া পূনর্বার।

ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান,
আসি অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন্ বলিদান
আজি পরীক্ষা, জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রাণ?
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, কান্ডারী হুশিয়ার!

======

image

আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে-
মোর মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর টগবগিয়ে খুন হাসে
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে।

আজকে আমার রুদ্ধ প্রাণের পল্বলে-
বান ডেকে ঐ জাগল জোয়ার দুয়ার -ভাঙা কল্লোলে।
আসল হাসি, আসল কাঁদন
মুক্তি এলো, আসল বাঁধন,
মুখ ফুটে আজ বুক ফাটে মোর তিক্ত দুখের সুখ আসে।
ঐ রিক্ত বুকের দুখ আসে-
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!

আসল উদাস, শ্বসল হুতাশ
সৃষ্টি-ছাড়া বুক-ফাটা শ্বাস,
ফুললো সাগর দুললো আকাশ ছুটলো বাতাস,
গগন ফেটে চক্র ছোটে, পিণাক-পাণির শূল আসে!
ঐ ধূমকেতু আর উল্কাতে
চায় সৃষ্টিটাকে উল্টাতে,

আজ তাই দেখি আর বক্ষে আমার লক্ষ বাগের ফুল হাসে
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!
আজ হাসল আগুন, শ্বসল ফাগুন,
মদন মারে খুন-মাখা তূণ
পলাশ অশোক শিমুল ঘায়েল
ফাগ লাগে ঐ দিক-বাসে
গো দিগ বালিকার পীতবাসে;

আজ রঙ্গন এলো রক্তপ্রাণের অঙ্গনে মোর চারপাশে
আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে!
আজ কপট কোপের তূণ ধরি,
ঐ আসল যত সুন্দরী,
কারুর পায়ে বুক ডলা খুন, কেউ বা আগুন,
কেউ মানিনী চোখের জলে বুক ভাসে!
তাদের প্রাণের ‘বুক-ফাটে-তাও-মুখ-ফোটে-না’ বাণীর বীণা মোর পাশে
ঐ তাদের কথা শোনাই তাদের
আমার চোখে জল আসে
আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে!

আজ আসল ঊষা, সন্ধ্যা, দুপুর,
আসল নিকট, আসল সুদূর
আসল বাধা-বন্ধ-হারা ছন্দ-মাতন
পাগলা-গাজন-উচ্ছ্বাসে!
ঐ আসল আশিন শিউলি শিথিল
হাসল শিশির দুবঘাসে
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!

আজ জাগল সাগর, হাসল মরু
কাঁপল ভূধর, কানন তরু
বিশ্ব-ডুবান আসল তুফান, উছলে উজান
ভৈরবীদের গান ভাসে,
মোর ডাইনে শিশু সদ্যোজাত জরায়-মরা বামপাশে।

মন ছুটছে গো আজ বল্গাহারা অশ্ব যেন পাগলা সে।
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!!

======

image
image