🌇 সন্ধ্যার আলোয় সেই চিঠিটা 🌇
নির্জন এক গ্রাম। নাম—নন্দীপাড়া। সেখানে প্রতিদিনের মতোই ধীরে ধীরে নামছিল সন্ধ্যা। সূর্যের শেষ রঙগুলো ছুঁয়ে যাচ্ছিল গ্রামের পুরনো বটগাছটাকে। পাখিরা ফিরছিল নীড়ে। আর একটা ছোট্ট মেয়ে, নাম তিথি, বসে ছিল গ্রামের পোস্ট অফিসের বেঞ্চে।
তিথি প্রতিদিন সন্ধ্যায় এখানেই আসে। সে জানে—আজও একটা চিঠি আসবে। কার চিঠি?
তার বাবার।
তিথির বাবা ফরহাদ হোসেন, সৈনিক। সীমান্তে কর্মরত। মাসে একবার চিঠি আসে তাঁর। সেই চিঠি পড়ে তিথির মা হাসেন, আবার চোখ মুছেন। তিথি কিছু বুঝে, কিছু বোঝে না। শুধু চিঠিটা হাতে নিলে মনে হয়—বাবা তার পাশে।
আজকের সন্ধ্যাটা একটু আলাদা। হালকা বাতাসে একটা চেনা গন্ধ—কেন জানি মনে হচ্ছে, আজ বাবার চিঠি আসবেই।
হঠাৎ সাইকেলের ঘণ্টা বাজিয়ে ঢুকলেন পোস্টমাস্টার কাশেম কাকা। মুখে এক চিলতে হাসি, হাতে একটা সাদা খাম। তিথির দিকে তাকিয়ে বললেন,
— “এই যে মা তিথি, আজ তো তোর নামেই চিঠি এসেছে!”
তিথি অবাক! এই প্রথম সে নিজে চিঠি পেয়েছে!
চিঠিটা খুলে দেখে—বাবার হাতের লেখা, কিন্তু এবার লেখা শুধু তার জন্য। সেখানে লেখা:
> "আমার ছোট্ট পাখি তিথি,
আমি জানি, তুই প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলা পোস্ট অফিসে যাস। তোর মুখটা কল্পনায় ভেসে ওঠে।
জানিস, তুই যখন হাসিস—সন্ধ্যার আকাশটাও একটু বেশি ঝকঝকে হয়ে ওঠে।
আমি খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো।
ততদিন এই চিঠিটাই ধরে রাখিস।
ভালোবাসা রইলো—
তোর বাবা।"
তিথির চোখে জল এসে গেল। কিন্তু সেই সন্ধ্যার আকাশটা সত্যিই ঝলমলে হয়ে উঠল—আলোতে, অনুভবে, ভালোবাসায়।
---
🌌 শেষ কথা
সন্ধ্যা শুধু দিন শেষের নাম নয়। কারও অপেক্ষা, কারও স্মৃতি, আবার কারও কাছে ভালোবাসার চিঠির সময়।